১লা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৬ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১০ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

কমলগঞ্জে লাউ চাষে সফল ‘মজিদ বক্স’

admin
প্রকাশিত অক্টোবর ২২, ২০২৪, ০৮:৩৯ অপরাহ্ণ
কমলগঞ্জে লাউ চাষে সফল ‘মজিদ বক্স’

Manual6 Ad Code

জায়েদ আহমেদ, কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার কৃষক মজিদ বক্স। ইতি মধ্যে লাউ চাষ করে সাফল্য অর্জন করেছেন।

Manual7 Ad Code

উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাল্লাপার গ্রামে লাউ চাষ করছেন তিনি। দেশীয় পদ্ধতিতে কোনো প্রকার কীটনাশক ছাড়া চাষ করে ইতিমধ্যে এলাকায় সফল লাউ চাষি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।

তবে লাউ চাষি মজিদ বক্স বলেন, লাউয়ের চাষাবাদ করে জমি থেকে যেমন আশানুরূপ ফলন পাচ্ছি সেইসঙ্গে বাজারে দামও পেয়ে আসছি ভালো। তবে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে যদি একটু সহযোগিতা পেতাম, তাহলে লাউ চাষ করে আরো বেশি লাভবান হতাম।

মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে কৃষক মজিদ বক্স লাউ ক্ষেতে গেলে দেখা যায়, ‘২২ শতক জায়গায় লাউ চাষ করেছেন। মাচায় ঝুলে আছে অসংখ্য ছোট বড় লাউ। প্রতিনিয়ত সকাল বিকাল চলছে লাউক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। বাজারে বিক্রিতে ভালো দাম পাওয়ায় মজিদ বক্স বেশ খুশি। এরই মধ্যে সফল লাউ চাষি হিসেবে তার সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে পুরো এলাকায়। প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন দেখতে ও পরামর্শ নিতে আসছেন তার কাছে। লাউ চাষ করে এই পর্যন্ত ৩০ হাজার টাকা খরচ হওয়া সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন।

তার জমিতে আরও ৫০ হাজার টাকার মতো লাউ আছে বলে জানান তিনি। বাড়তি আয়ের আশায় মাচা পদ্ধতিতে লাউ চাষ শুরু করেন মজিদ বক্স। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া উপেক্ষা করে নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে গাছগুলোর গুণগতমান ঠিক রাখায় প্রতিটি গাছের ডগায় প্রচুর পরিমাণে লাউ ধরেছে। এই পদ্ধতিতে লাউ চাষে রোগবালাই অনেক কম ও ফলনও ভালো হয় বলে জানান মজিদ বক্স।’

Manual2 Ad Code

সফল চাষি কৃষক মজিদ বক্স এর সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘একটু বাড়তি আয়ের আশায় মাচা পদ্ধতিতে লাউ চাষ শুরু করেছি। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া উপেক্ষা করে নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে গাছগুলোর গুণগতমান ঠিক রাখায় প্রতিটি গাছের ডগায় প্রচুর পরিমাণে লাউ ধরেছে। এই পদ্ধতিতে লাউ চাষে রোগবালাই অনেক কম ও ফলনও ভালো হয়েছে। আশা করছি দামও ভালো পাব। তিনি বলেন, ৭০-১০০ টাকার করে বিক্রি করছি লাউ। ২২ শতক জায়গায় আমি এই লাউ চাষ করেছি। এখন পর্যন্ত বাজারে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছি। জমিতে আরও ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকার লাউ আছে। লাউয়ের চাষ করে এত লাভ হবে, কখনো ভাবিনি। তাই আগামীতে লাউ চাষ আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

এছাড়াও তিনি বলেন, এই লাউ বিষমুক্ত। কারণ লাউ ক্ষেতে কোনো কীটনাশক ব্যবহার করা হয়নি। শুধু গোবর ব্যাবহার করেছি। সেই জন্য বিভিন্ন এলাকাতে লোকজন আমার জমিতে এসে লাউ নিয়ে যায়। এখানে পাইকাররাও আসে। আমাকে বাজারে লাউ নিয়ে যেতে হয়।

তবে কৃষি অফিস থেকে কোনো সহযোগীতা পেয়েছেন কি না তা জানতে চাইলে মজিদ বক্স বলেন, ‘কৃষি অফিস আমাকে কোনো রকম সহযোগিতা করেনি। নিজ উদ্যোগে আমার এই পর্যন্ত আসা। আমি একজন প্রকৃত কৃষক কিন্তু উপজেলায় গিয়ে খুজ নিয়ে দেখুন আমার কোনো নামনিশা নাই। যারা কৃষক নায় তাদের নাম তাদের কাছে আছে। যদি তাদের সহযোগিতা পেতাম তাহলে আমার জন্য ভালো হত।’

স্থানীয় বাসিন্দা ইউসুফ আলী বলেন, ‘আমি প্রায় সময় মজিদ বক্সের জমি থেকে লাউ কিনে নেই। কীটনাশক ছাড়া লাউ তাই বাড়ির সবাই পছন্দ। এছাড়াও এখানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটক ও স্থানীয় লোকজন এসে নিয়ে যায়। ৭০-১০০ টাকার মধ্যে লাউ।’

স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষক লিয়াকত মিয়া জানান, ‘আমিও একজন টমেটো চাষি। কোনো ধরনের কীটনাশক ছাড়াই টমেটো চাষ করছি। আমার গাছে প্রচুর পরিমান টমেটো আছে। আশা করছি অল্প কিছুদিনে মধ্যে টমেটো বিক্রি করা শুরু করতে পারবো। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি কোনদিন কৃষি অফিসের সহযোগিতা পাইনি। তারা তাদের পরিচিতজনদের সকল ধরনের সহযোগিতা করেন। আমাদের এসে দেখেনও না। তিনি বলেন, নিজ উদ্যোগে ও কোন পরামর্ষ ছাড়া লাউ চাষ করেছেন মজিদ বক্স। ভালো লাউ এসেছে উনার। বিক্রি করে লাভবানও হচ্ছেন তিনি। এছাড়াও তিনি বেগুন চাষ করেছে। সেখানে লক্ষ টাকার মতো বেগুন আছে।’

Manual7 Ad Code

কমলগঞ্জ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা জয়েন্ত কুমার রায় জানান, ‘কৃষকরা আমাদের কাছে সহযোগিতা চাইলে আমরা অবশ্যই সহযোগিতা করি। আর মাঠ পর্যায়ে দেখেছি কিছু নতুন উদ্যোগতা সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এখন সারাবছরই সবজির চাষ হয়। কৃষকরা জৈব পদ্ধতিতে বিষমুক্ত লাউ চাষ করছেন। বাজারে লাউয়ের চাহিদা থাকায় ও নায্যদামে বিক্রি করতে পেরে লাভবান হয়েছেন কৃষকরা। কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সব ধরনের সহায়তা দেয়া হচ্ছে।’

Manual7 Ad Code

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code