শাকুর মাহমুদ চৌধুরী, ইনানী থেকে ফিরে:
শীতের আমেজ শুরু হতেই কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কজুড়ে যেন নেমেছে পর্যটকদের বর্ণিল স্রোত। সারি সারি ঝাউগাছের ফাঁক দিয়ে সমুদ্রের গর্জন আর বালুকাবেলার অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগে ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভিড় জমছে ইনানী সী-বীচ, পাথুরে-বীচ পাটোয়ারটেক ও আশপাশের পর্যটন স্পটগুলোতে।
বিশেষ করে শুক্রবার ও শনিবার- সপ্তাহের এই দুই ছুটির দিনে দেশজুড়ে আগত পর্যটকের ঢলে মুখরিত হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। ঢাকাসহ দিনাজপুর, পটুয়াখালী, বরিশাল, ফরিদপুর ও রংপুর থেকে আগত ভ্রমণপিপাসুরা এই সময়টাকে উপভোগ করছেন দারুণভাবে। সমুদ্রের নীল জলরাশি, ঢেউয়ের তালে তালে পাথুরে বীচের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য আর ইনানীর লাল কোরালের সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে পর্যটকরা কাটাচ্ছেন হাসি-আনন্দে ভরপুর সময়।
অন্যদিকে, সন্ধ্যা নামতেই কক্সবাজার শহরের শিল্প-বাণিজ্য মেলাতেও দেখা যাচ্ছে উপচে পড়া ভিড়। পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘোরাঘুরি, কেনাকাটা আর সাংস্কৃতিক আয়োজন উপভোগে পুরো মেলা প্রাঙ্গণ হয়ে উঠেছে উৎসবমুখর।
ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা মোহাম্মদ আদনান বলেন, ইনানী ও পাটোয়ারটেকের সৌন্দর্য সত্যিই মন ছুঁয়ে যায়। ঢেউয়ের গর্জন, পাথরের উপর বসে সূর্যাস্ত- জীবনের সেরা অনুভূতি।
দিনাজপুরের নাসরিন আক্তার জানান, শীতের শুরুতে কোথায় যাব ঠিক করতে পারছিলাম না। এখন মনে হচ্ছে কক্সবাজারই ছিল সেরা সিদ্ধান্ত। নিরাপত্তা ভালো, পরিবেশও দারুণ। পর্যটকের ভিড়ে সবচেয়ে আনন্দে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
ইনানী বীচের ফাস্টফুড বিক্রেতা এম. এ. সালাম বলেন, মৌসুমটা ভালোভাবেই শুরু হয়েছে। শুক্রবার–শনিবার মানুষ এত এসেছে যে বিক্রি খুবই ভালো হয়েছে।
পাটোয়ারটেক এলাকার রেন্ট-এ-কার কর্মী মো. ইউসুফ জানান, শীতের শুরুতেই গাড়ি রিজার্ভ নেওয়া বেড়ে গেছে। সকালে ইনানী, বিকালে পাটোয়ারটেকে- প্রায় সব পরিবারই ঘুরতে যাচ্ছে।
শিল্প-বাণিজ্য মেলার এক বিক্রেতা বলেন, রাত নামতেই এত মানুষ হয় যে স্টল সামলাতে কষ্ট হয়। স্থানীয় পণ্য, পোশাক, শো-পিস আর খাবারের স্টলগুলোতে ক্রেতার ভিড় লেগেই থাকে।
কক্সবাজার পর্যটন ব্যবসায়ী সমিতির এক সদস্য জানান, শীতকাল আমাদের প্রধান পর্যটন মৌসুম। পর্যটকদের নিরাপদ, স্বাচ্ছন্দ্যময় ভ্রমণ নিশ্চিত করতে আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত।
ইনানী ও পাটোয়ারটেক বর্তমানে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় স্পট। শীতের শুরুতেই পর্যটনের প্রাণচাঞ্চল্যে কক্সবাজারের ইনানী ও পাটোয়ারটেক সৈকত এখন উৎসবের নগরী। ভ্রমণ, বিনোদন, কেনাকাটা- সব মিলিয়ে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মুখর পুরো এলাকা। এতে যেমন খুশি স্থানীয় ব্যবসায়ীরা, তেমনি নিরাপদ ও আনন্দময় ভ্রমণে সন্তুষ্ট পর্যটকেরা।
Sharing is caring!