জামায়াতসহ আট দলের স্মারকলিপি: জুলাই সনদের দাবিতে উত্তাল মৎস্যভবন এলাকা
বিশেষ প্রতিনিধি( খুলনা )থেকে: মৎস্যভবন এলাকার দুপুরটা আজ ছিল অস্বাভাবিক। বাতাসে টান টান উত্তেজনা। ধুলোমাখা রাস্তায় একে একে জমা হচ্ছিলো অসংখ্য কর্মী—কারো হাতে পতাকা, কারো হাতে প্ল্যাকার্ড। কণ্ঠে একটাই সুর— “জুলাই সনদ বাস্তবায়ন চাই!”
দুপুর গড়াতে না গড়াতেই পুলিশি ব্যারিকেড পড়ে যায় সড়কের মাঝখানে। স্লোগানের তীব্রতা বাড়ে, মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যায় দুই পক্ষ—একদিকে আট দলের মিছিল, অন্যদিকে পুলিশ। এক মুহূর্তের জন্য যেন বাতাসও থমকে যায়। তারপরেই ভেসে আসে হুইসেলের শব্দ, ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা। তবু কেউ কেউ পিছু হটে না—জামায়াত, ইসলামী ঐক্যজোট, ইসলামী আন্দোলনসহ আট দলের নেতারা তখনও দাবি জানাতে দৃঢ়।
শেষ পর্যন্ত এক প্রতিনিধি দল এগিয়ে যায় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের বাসভবনের দিকে—হাতে তাদের দাবির কপি, চোখেমুখে দৃঢ়তা। সেই দাবিপত্রেই লেখা আছে আজকের আন্দোলনের মূল সুর:
১. জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ অবিলম্বে জারি করা;
২.ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের তারিখ ঘো কুশোদা করা;
৩. আগামী নির্বাচনে সংসদের দুই কক্ষে প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) পদ্ধতি চালু;
৪. অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সকল দলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা;
৫. বিগত সরকারের নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা—এবং জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা।
জামায়াতে ইসলামী’র সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার দুপুরে গণমাধ্যমকে বলেন,”দেশ এখন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। জুলাই সনদই হতে পারে নতুন রাজনৈতিক ঐক্যের ভিত্তি।’ আমরা চাই, জাতি যেন নিজেদের ভবিষ্যৎ নিজেরাই নির্ধারণ করে।’ তার কণ্ঠে এক ধরনের ইতিহাসবোধের ভার ছিল—যেন ৭৫ পরবর্তী রাজনৈতিক বিভাজনের ক্লান্ত ছায়া পেরিয়ে নতুন কোনো পথের দিশা খোঁজার আহ্বান।
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর সূত্র জানায়, স্মারকলিপি গ্রহণ করা হয়েছে, তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
Sharing is caring!