২৩শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৮শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

কৈশোর বয়েসে টিকটক ব্যবহারের কূফল: আর কত পথভ্রষ্ট হবে আগামী প্রজন্ম

admin
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৫, ০৯:১৪ অপরাহ্ণ
কৈশোর বয়েসে টিকটক ব্যবহারের কূফল: আর কত পথভ্রষ্ট হবে আগামী প্রজন্ম

নওগাঁ প্রতিনিধি:

রাজশাহীর নওগাঁ থেকে উদ্ধার কিশোরী আরাবি ইসলাম সুবা (১১) জানিয়েছে, প্রায় ২ বছর আগে টিকটকের মাধ্যমে আব্দুল মোমিনের (২১) সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে দুজনের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে, যা পরে ঘনিষ্ঠতায় রূপ নেয়।

আজ মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নওগাঁ শহরের আরজি নওগাঁ মধ্যপাড়া মহল্লা থেকে সুবাকে উদ্ধারের পর সে গণমাধ্যমে এসব কথা জানায়।

আরাবি ইসলাম সুবার বাড়ি বরিশালে। মায়ের চিকিৎসার জন্য সম্প্রতি সুবা বরিশাল থেকে ঢাকায় তার ফুপুর বাড়িতে আসে। ঢাকায় আসার পর মোমিনের সঙ্গে দেখা করে সে। মোমিন ঢাকার মোহাম্মদপুরে একটি কাপড়ের দোকানে কাজ করেন। দেখা করার পর দুজনে সিদ্ধান্ত নেয় মোমিনের গ্রামের বাড়ি নওগাঁয় ঘুরতে যাবে তারা। তবে পরিবারের কেউ এ বিষয়ে কিছুই জানত না।

সুবা আরও বলে, ‘পারিবারিক নানা কারণে বাড়িতে ভালো লাগছিল না দীর্ঘদিন ধরে। এ জন্য দুজন ঘুরতে বেরিয়ে পড়ি। আমরা এখনো বিয়ে করিনি।’

এ বিষয়ে নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আলম বলেন, ‘ঢাকা থেকে সুবা মিসিং হয়েছে এমন একটি তথ্য আমাদের কাছে ছিল। সুবা নওগাঁয় অবস্থান করছে এমন তথ্যে পাওয়ার পর নওগাঁ মধ্যপাড়া এলাকায় সুবার খোঁজ পাওয়া যায়। ঘটনাস্থলে র‍্যাব সদস্যরা অবস্থিত ছিলেন। সুবাকে পাওয়ার পর তাকে র‌্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্পে নেওয়া হয়েছে। তবে তরুণের খোঁজ পাওয়া যায়নি।’

ওসি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসায় সুবা স্বীকার করে, টিকটকের সুবাদে তাদের দুজনের পরিচয় হয়। তারা এখনো বিয়ে করেনি বলে জানায় ওই কিশোরী।

এর আগে নওগাঁ কালিতলা সদর পুলিশ ফাঁড়িতে হেফাজতে নেওয়া হয় তরুণের বাবা মোস্তফাকে। তিনি বলেন, ‘আজ ভোরের দিকে ছেলে ওই মেয়েকে নিয়ে বাড়ি আসে। ছেলে ঢাকায় কাপড়ের দোকানে কাজ করত। তারা বিয়ে করেছে কি না এ বিষয়ে কিছুই বলেনি। দুজনই বেলা ১১টা পর্যন্ত বাড়িতেই ছিল। পরে পুলিশ খোঁজ করা শুরু করলে দুজনই বাড়ি থেকে চলে যায়।’

সুবার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত মায়ের চিকিৎসার জন্য দুই মাস আগে বরিশাল থেকে ঢাকায় এসেছিল সুবা। গত রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ফুপাতো ভাইয়ের সঙ্গে বাসা থেকে বের হয় সুবা। তারা প্রথমে আদাবরের জাপান গার্ডেন এলাকার টোকিও স্কয়ার মার্কেটে ঘোরাঘুরি করে। মার্কেট থেকে বের হয়ে রাস্তা পার হতে গিয়ে নিখোঁজ হয় সে। সুবা বরিশালের একটি বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী।

মার্কেটের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, আদাবরের জাপান গার্ডেন এলাকার টোকিও স্কয়ার মার্কেটে দুজনে ঘোরাঘুরি করছে। সেখানে সুবার ফুপাতো ভাই ছাড়া আরেকজনও ছিল। তার সঙ্গে সুবাকে হাত ধরে হাঁটতে দেখা গেছে।

মেয়ে নিখোঁজের বিষয়ে জানতে চাইলে সুবার বাবা ইমরান রাজিব আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রোববার সন্ধ্যায় ফুপাতো ভাইয়ের সঙ্গে বাইরে বের হয় সুবা। রাস্তা পার হওয়ার সময় ফুপাতো ভাই কিছুটা আগে চলে যায়। পরে সে পেছনে ফিরে দেখে সুবা নেই।’

প্রেমের সম্পর্ক ছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের কোনো সম্পর্ক ছিল না। আমরা ধারণা করছি প্রতারক চক্র তাকে নিয়েছে।’

Sharing is caring!