স্বপ্না শিমু, স্টাফ রিপোর্টার
ফিফা বিশ্বকাপে বজ্রঝড়, দাবানলের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের শঙ্কা রয়েছে। আগামী বছরের ১১ জুন থেকে শুরু হতে যাওয়া ফিফা বিশ্বকাপে কানাডা ও মেক্সিকোর তুলনায় বেশি ম্যাচ হবে যুক্তরাষ্ট্রে।
গ্রীষ্মকালে সেখানে আবহাওয়া বেশ উত্তপ্ত থাকার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে তীব্র গরমে খেলা দেখা কঠিন হতে পারে সমর্থকদের জন্য। প্রাকৃতিক দুর্যোগের চিন্তায় বিশ্বকাপে অংশ নেয়া দলগুলো। তবে, পরিস্থিতি সামাল দিতে সতর্ক অবস্থায় থাকার কথা জানিয়েছে আয়োজক তিন দেশ।
নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি সেন্টারে জমকালো ড্র ও সূচি ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই বেজে উঠেছে বিশ্বকাপ ফুটবলের দামামা। উন্মাদনা শুরু হয়ে গেছে পুরো দুনিয়া জুড়ে। প্রথমবারের মতো ৪৮ দলের বিশ্বকাপ।
বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এই আসরে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর ১৬টি ভেন্যুতে হবে ১০৪টি ম্যাচ। যা গেলো আসরের চেয়ে অনেক বেশি। টুর্নামেন্টটির ৭০ শতাংশের বেশি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্রে।
সফল আয়োজনে কাতার বিশ্বকাপকে ছাড়িয়ে যেতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। তবে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, বিশ্বকাপ চলাকালীন উত্তপ্ত আবহাওয়া ও বৈরি পরিস্থিতি সামাল দেয়া।
এ বছর জুন জুলাইয়ে বিশ্বকাপের ড্রেস রিহার্সাল হিসেবে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হয়েছিলো ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ। ৩২ দলের ওই টুর্নামেন্ট চলাকালে দেশটির বিরূপ আবহাওয়া নিয়ে সমালোচনা হয়েছিল বেশ।
রৌদ্রোজ্জ্বল দিনেও হঠাৎ বজ্রপাত কিংবা রোদের কড়াকড়িতে বারবার ম্যাচ থামিয়ে কুলিং ব্রেক দেয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটেছিলো সে সময়। একই শঙ্কা আছে ২০২৬ বিশ্বকাপেও। তার ওপর এখানে ৪৮ দল এবং ম্যাচসংখ্যাও অনেক বেশি হওয়ায় বিপাকে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে দর্শক ও ফুটবলারদের। চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানলে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়। বিশ্বকাপের গ্রুপপর্বে প্রতিটি দেশ খেলবে তিনটি করে ম্যাচ।
বেশিরভাগ ম্যাচ যুক্তরাষ্ট্রে হওয়ায় দলগুলোকে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের অভিজ্ঞতা থেকে তাপমাত্রার বিষয়টি মাথায় রাখতে হচ্ছে। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপেও মধ্যপ্রাচ্যে অতিরিক্ত তাপমাত্রার কথা বিবেচনা করে নভেম্বর-ডিসেম্বরে বিশ্বকাপ আয়োজন করা হয়েছিলো।
১৯৯৪ সালের পর আবারও বিশ্বকাপের আসর বসছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটির ন্যাশনাল ফুটবল লিগের ম্যাচ আয়োজিত হয় ডালাসের আরলিংটন, টেক্সাস, হিউস্টন, আটালান্টার মতো জায়গায়।
এ ছাড়া লস অ্যাঞ্জেলসের সোফাই স্টেডিয়াম, মেক্সিকোর আজতেকা স্টেডিয়াম, গুয়াদালাজারার অ্যাক্রন, মন্টেরের বিবিভিএ স্টেডিয়ামের কন্ডিশন বিরূপ হয়ে উঠতে পারে। মাঠে খেলা চলাকালীন বজ্রঝর, দাবানালের মতো পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন আয়োজকরা।
পরিস্থিতি জটিল হলে ম্যাচ বাতিলের মতো ঘটনাও হতে পারে বিশ্বকাপে। তাই সমর্থকদের টিকিট থেকে শুরু করে হোটেল-মোটেলে ওঠা প্রতিটি ক্ষেত্রেই কার্ড ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন আয়োজকরা।
এতে করে কোনো কারণে খেলা বাতিল হলে দর্শকদের অর্থ ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। কাতার বিশ্বকাপের আগেও নানা সমালোচনা তৈরি হয়েছিলো আয়োজন নিয়ে। তবে, দক্ষতার সঙ্গেই সব পরিস্থিতি সামলে নিয়েছিলো মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি।
আবহাওয়া অফিসের প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস অনুযায়ী পরিস্থিতি মোকাবেলা করা আশা যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর।
Sharing is caring!