১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল

admin
প্রকাশিত নভেম্বর ২০, ২০২৫, ০২:৪৬ অপরাহ্ণ
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল

Manual4 Ad Code

সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল

বিশেষ প্রতিনিধি: দীর্ঘ দুই দশকের বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা আবার ফিরে এল সংবিধানে। বহুল আলোচিত এই ব্যবস্থা বাতিলের পূর্বের রায়কে অবৈধ ঘোষণা করে আজ বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ আদালত ত্রয়োদশ সংশোধনীকে পূর্ণ বৈধতা দিয়েছেন।

সকাল ৯টা ৪০ মিনিট। আপিল বিভাগের এজলাসে তখন টানটান উত্তেজনা। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে উপস্থিত সবাই বুঝতে পারছিলেন—এদিন ঘোষিত হতে যাচ্ছে একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক সিদ্ধান্ত। কিছুক্ষণের মধ্যেই বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে রায় ঘোষণা করেন।

বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা ছিলেন—বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি মো. রেজাউল হক, বিচারপতি এস এম ইমদাদুল হক, বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি ফারাহ মাহবুব। রায় ঘোষণার সময় আদালতকক্ষ কানায় কানায় পূর্ণ।

রায়ে বলা হয়—সংবিধানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরছে। তবে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে। চতুর্দশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা কার্যকর হবে।

Manual7 Ad Code

গত ২১ অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে টানা শুনানির মধ্য দিয়ে এই রায়ের দিন নির্ধারণ হয়। ১১ নভেম্বর শুনানি শেষে আজকের দিনটি চূড়ান্ত করা হয়। আদালতে রিটকারী পক্ষের পক্ষে শুনানি করেন ড. শরীফ ভূঁইয়া। বিএনপির পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল যুক্তি উপস্থাপন করেন। জামায়াতে ইসলামের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো: শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক।

Manual6 Ad Code

সাংবিধানিক এই বিতর্কের সূচনা ১৯৯৮ সালে, যখন ত্রয়োদশ সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে প্রথম রিট দায়ের হয়। হাইকোর্ট ২০০৪ সালে সংশোধনীটিকে বৈধ ঘোষণা করে। পরে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির বেঞ্চ ২০১১ সালে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতে সংশোধনী বাতিল করে রায় দেন, যার পরই তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা সংবিধান থেকে বাদ পড়ে। একই বছরে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে এই পরিবর্তন চূড়ান্ত হয়।

Manual5 Ad Code

পাঁচ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর পরিস্থিতি নতুন মোড় নেয়। সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন বিশিষ্ট নাগরিক রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। পরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও আলাদা আবেদন দাখিল করেন।

Manual3 Ad Code

দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের শেষপ্রান্তে এসে আজকের রায়ে আবার ফিরে এলো সেই নির্বাচনকালীন ব্যবস্থা, যা বাংলাদেশের রাজনীতিতে একসময় স্থিতির প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হতো।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code