ডেস্ক রিপোর্ট, রংপুর
রংপুরের বাতাসে বুধবার দুপুরটা ছিল রাজনৈতিক কথাবার্তার ভারে ঘন।
শহরের প্রাণকেন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরির পুরনো হলরুমে একদল তরুণ কর্মী আর সাংবাদিকদের মাঝখানে দাঁড়িয়ে, এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ যেন এক অন্যরকম আহ্বান ছুড়ে দিলেন—’বিচারে ইনসাফ করতে হবে।’
তিনি বললেন,’যদি কাশিমপুর কারাগারে আইনজীবী, সাংবাদিক, চিকিৎসকসহ সব পেশার মানুষ থাকতে পারেন, তাহলে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে সেখানে রাখতেই সমস্যা কোথায়?’
কথাটির পর মুহূর্তেই হলরুমে নেমে এলো চাপা নিস্তব্ধতা। ফুয়াদের কণ্ঠে তীক্ষ্ণ সমালোচনা আর রাজনৈতিক বাস্তবতার কাঁটাযুক্ত সততা— ‘দিল্লীর ছায়াতলে থাকা বিভিন্ন বাহিনীর ভেতরে ৩০-৪০ জন ক্রিমিনাল আছে।’
তিনি বললেন, ‘এই ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার না করলে বাহিনীগুলো কখনোই স্বচ্ছ হবে না।’ বক্তৃতার ফাঁকে ফাঁকে তার চোখ যেন সাংবাদিকদের ভিড়ে প্রশ্ন খুঁজছিল— এই সময়ের রাজনীতি আসলে কোন পথে হাঁটছে?
তিনি আরও বলেন, ‘যদি আপনারা টেম্পু স্ট্যান্ডের চাঁদাবাজ, দুর্নীতিবাজ আর অপরাধীদের ভোট দেন, তবে দেশের উন্নয়নও হবে অপরাধের কাঁধে দাঁড়িয়ে। তখন আশা নয়, হতাশাই হবে ভবিষ্যতের নাম।’
হলরুমের পেছনে তখন কয়েকজন তরুণ কর্মী ফিসফিস করে বলছিলেন, ‘এই কথাগুলো মানুষ শুনুক, না হলে কিছুই বদলাবে না।’সরকারি প্রতিষ্ঠানে রাজনীতি নিষিদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফুয়াদ বলেন, ‘আমরা এমন এক দেশ চাই, যেখানে অফিসে কাজ হবে দায়িত্বে, নয় দলে।’
সভার শেষ দিকে রংপুর মহানগর এবি পার্টির স্থানীয় নেতৃবৃন্দ তার পাশে দাঁড়িয়ে একাত্মতার ইঙ্গিত দেন। বাইরে তখন সন্ধ্যার ছায়া, আলো-অন্ধকারে মিশে যাচ্ছে শহর। ঠিক সেই মিশ্র আলোয় ফুয়াদের কণ্ঠে আবার ভেসে আসে শুরুতে বলা সেই বাক্য—’বিচারে ইনসাফ করতে হবে।’ এ যেন শুধু রাজনৈতিক দাবি নয়, সময়ের প্রতিটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর প্রতিধ্বনি।
Sharing is caring!