১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

ফরিদপুরে স্কুলশিক্ষক অপহরণ, নেপথ্যে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য

admin
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৫, ০৬:২০ অপরাহ্ণ
ফরিদপুরে স্কুলশিক্ষক অপহরণ, নেপথ্যে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য

Manual2 Ad Code

নিজস্ব প্রতিবেদক, ফরিদপুরে শংকর বৈরাগী (৪৫) নামে এক স্কুলশিক্ষক অপহরণ নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড সৃষ্টি হলেও নেপথ্যে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে অশ্লীলতার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি এক ছাত্রীর সঙ্গে অশ্লীল ছবি আদান-প্রদান, কথাবার্তার তথ্য পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ওই ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলে অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। এসব ঘটনায় ওই শিক্ষকের বিচার চেয়ে পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দিয়েছে এক ছাত্রী।

শংকর বৈরাগী শহরের ঈশান বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের আইসিটি বিভাগের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি ওই স্কুলের নবম-দশম শ্রেণিতে গণিতের ক্লাস নিতেন। ৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শহরের অম্বিকা মেমোরিয়াল সামনে থেকে একটি রিকশায় কয়েকজন যুবকের সঙ্গে তিনি চলে যান। এর মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে তাঁর স্ত্রী কোতোয়ালি থানা-পুলিশকে অবগত করেন এবং তাঁর স্বামী অপহরণের শিকার হয়েছেন বলে পুলিশকে জানান।

Manual8 Ad Code

পরে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ রাত ১০টার দিকে শহরতলির আদমপুর মোল্যাডাঙ্গীর কালাম মোল্যার বাড়ি থেকে তাঁকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ওই শিক্ষক বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় অপহরণ মামলা করেছেন। মামলায় শহরের গুহলক্ষ্মীপুরের সেকেন্দার আলী মোল্যার ছেলে আশিকুজ্জামান সানিমকে (২৮) একমাত্র আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

Manual5 Ad Code

তবে এ ঘটনায় নেপথ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। স্কুলটির দুজন এসএসসি পরীক্ষার্থী সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই শিক্ষক তাঁর বাসায় ছাত্রীদের প্রাইভেট পড়াতেন। সেই সুবাদে ছাত্রীদের পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের আশ্বস্ত করে বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিতেন। রাজি না হলে পরীক্ষা দিতে না দেওয়ার এবং ফেল করিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। এভাবে এক ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি তারা স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শামসুন নাহারকে তিন মাস আগে অবগত করেন। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ধামাচাপা দেয় এবং ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়ায় তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, এসব ঘটনার কয়েকটি স্ক্রিনশট ও ছবি এক ছাত্রীর মোবাইল থেকে গোপনে নিয়ে নেয় তার আরেক বান্ধবী। পরে তার বান্ধবীর মাধ্যমে ওই ছবি চলে যায় আশিকুজ্জামান সানিমের কাছে। এই ছবিগুলো নিয়ে শিক্ষক শংকর বৈরাগীর সঙ্গে তাঁরা যোগাযোগ করেন। এ ছাড়া সানিম আগেও টাকাও নিয়েছেন বলে ফরিদপুর জিলা স্কুলের সহকারী ইংরেজি শিক্ষক রেজভী জামান জানান।

Manual5 Ad Code

ঈশান বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঈশান বালিকা উচ্চবিদ্যালয়।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে আশিকুজ্জামান সানিম এক ছাত্রীকে এলাকার ছোট বোন দাবি করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার এলাকার এক ছোট বোন শংকর বৈরাগী স্যারের ব্ল্যাকমেলে পড়ে ধর্ষণের শিকার হচ্ছে বলে জানতে পারি। এমনকি আমরা প্রমাণও পাই। এসব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য স্যারকে আমরা নিয়ে আসি। স্যার নয়, আমরা একজন ধর্ষণকারীকে ধরে নিয়ে আসছিলাম। এটা যদি আমাদের অপরাধ হয়ে থাকে এবং আমরা যদি অপহরণ করে থাকি তাহলে শাস্তি মাথা পেতে নেব। এ ঘটনার পেছনে তদন্ত করে ওই শিক্ষককে উপযুক্ত শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’

Manual2 Ad Code

তবে শিক্ষক শংকর বৈরাগী ছাত্রীদের সঙ্গে যৌন হয়রানির বিষয়টি অস্বীকার করেন। তাঁর দাবি, তিনি অপহরণের শিকার হয়েছেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, ‘এ ঘটনায় শিক্ষক শংকর বৈরাগী থানায় অপহরণের এজাহার দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা মামলা নিয়েছি। এ ছাড়া ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দিয়েছে। দুটি বিষয় তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code