
তানিম আফরিন
গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গাইবান্ধা সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের উত্তর ফলিয়া গ্রামের সাবেক সৈনিক দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে অবৈধ সমপদ ও আয় বর্হিভুত অর্থের অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে দেলোয়ার হোসেন অবসর গ্রহনের সময় প্রায় ২৭ লক্ষাধিক টাকা সরকারিভাবে পেয়েছিলেন এবং সেই টাকা যাতে নষ্ট না হয় সে কারনেই টাকা হাতে পেয়ে সদর উপজেলার ফলিয়ার পাথার এলাকায় পুরো টাকার জমি ক্রয় করেন। পরে অবশ্য তার বড় মেয়ের বিয়ের সময় সেই জমি বিক্রয় করে দেন। তারপর থেকে কোনভাবেই চলে আসছিল দেলোয়ার হোসেনের পরিবার আর তাতেও কোন সমস্যা ছিল না কারো। তবে হঠাৎ করেই আবার আলোচনায় উঠে আসে ২০১৯ সালে। পরিবর্তন হয় তার চলাফেরা যেন আলাদিনের চেরাগ পেয়েছেন এমন একটা পরিবর্তন আসে তার মাঝে। গায়ে দামি সুট হাতে পরেন দামি ঘড়ি। অথচ এর কদিন আগেও এমন কিছুই ছিল না চোখে পরার মত।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসের ৩০ তারিখে রংপুর সিটি কর্পোরেশনে ০৬.৩১ শতাংশ জমি ক্রয় করেন এই দেলোয়ার হোসেন যার বর্তমান বাজার মুল্য এক কোটি টাকা। ওই ক্রয়কৃত জমির দলিল নং- ১৯৯১৩। পর্যায়ক্রমে ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর গাইবান্ধা পৌর এলাকার চকমামরোজপুর মৌজায় প্রায় অর্ধ কোটি টাকা দিয়ে ৪ শতাংশ জমি ক্রয় করেন দলিল (নং ৯৭৫৫)। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ১০ তারিখে আবারো রংপুর লালকুঠি এলাকায় ০.৫২ শতাংশ জমি সহ ফ্লাট ক্রয় করেন, যাহার বর্তমান মূল্য ৯০ লক্ষ টাকা, দলিল নং ২০২৪৬।
এই দেলোয়ার হোসেন চাকুরী থেকে অবসর গ্রহনের পর পরই মিশন ও পেনশন এর টাকা দিয়ে নিজ নামে এবং তার স্ত্রী মোছাঃ নাজমিন নাহার মিনির নামে কৃষি জমি ক্রয় করেন এবং পরে সেগুলো বিক্রিও করেন। তবে প্রশ্ন থেকে যায় একজন অবসর প্রাপ্ত সৈনিক এত অল্প সময়ের ব্যবধানে কয়েক কোটি টাকার সমপদ করলো কিভাবে? কেননা দেলোয়ার হোসেনের মুল বাড়ি ছিল রায়দাস বাড়ীতে, যা ব্রহ্মপুত্র নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে অনেক আগেই।
পরে গাইবান্ধা সদর উপজেলার উত্তর ফলিয়ায় কিছু জমি ক্রয় করে বসবাস শুরু করেন। প্রথম দিকে সেখানে টিনের ঘর থাকলেও বর্তমানে সেখানে করেছেন বিশাল রাজকীয় বাড়ি। সেহেতু তার পুর্বপুরুষের অনেক জমিজমা আছে মর্মেও সাফাই গাওয়ার কোন সুযোগ নেই। এহেন তথ্য সুত্রে সপষ্ট ভাবেই প্রতিয়মান যে ১৯৯৯ সালে অবসর গ্রহনের পরে একজন সৈনিক কিভাবে কোটি কোটি টাকার সমপদ ক্রয় করে। যা নিয়ে জনমনে রয়েছে নানা প্রশ্ন?
সেই সাথে সুধি মহলের দাবি এই দেলোয়ার হোসেনের আয় বর্হিভুত সমপদের উৎস বের করে আইনের মুখোমুখি করা দরকার। সুধি মহল আরো ধারনা করছে এই দেলোয়ার হোসেন রাষ্ট্র বিরোধী কোন কর্মের সাথে জড়ানোর মাধ্যমে এমন অসংগতি পূর্ণ সমপদের পাহাড় গড়েছে কি না সেটিও খতিয়ে দেখা দরকার।
তাই অতি দ্রুত এই দেলোয়ারকে আইনের আওতায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আয় বর্হিভুত সমপদের প্রকৃত হিসাবসহ এর সাথে জড়িতকে বা কাহারা রয়েছে তা বেরিয়ে আসবে। এ বিষযে সাবেক সেনা সদস্য দেলোয়ারের সাথে কথা বললে তিনি ২৫ লাখ টাকা মুল্যের একটি জমির কাগজ শুধু দেখাতে পেরেছেন আর অন্য কোন কাগজ দেখাতে পারেন নি এবং কোন সঠিক জবাব দিতে পারেননি।
Sharing is caring!