স্বপ্না শিমু স্টাফ রিপোর্টার
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে ক্ষমতা ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। বলেছেন, মাদুরোর জন্য ‘সরে দাঁড়ানোই বুদ্ধিমানের কাজ’ হবে। তবে ওয়াশিংটনের চাপের মুখে ভেনেজুয়েলাকে সমর্থন দেয়ার কথা জানিয়েছে রাশিয়া ও চীন।
ফ্লোরিডার বাসভবনে স্থানীয় সময় সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প বলেছেন, ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ আরও বাড়তে পারে।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ।
মাদুরোকে ক্ষমতা থেকে সরানোই যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য কি না– এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, আমি মনে করি, সম্ভবত তাই… তবে এটা তার (মাদুরো) ওপর নির্ভর করছে যে সে কী করতে চায়। আমি মনে করি, তার জন্য সরে দাঁড়ানোই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে আরও বলেন, ‘সে (মাদুরো) যদি শক্ত অবস্থান নেয়, তাহলে সেটা হবে শেষবারের মতো তার শক্ত অবস্থান নেয়া।’
এদিকে, মার্কিন কোস্টগার্ড টানা দ্বিতীয় দিনের মতো ভেনেজুয়েলার তৃতীয় একটি তেলবাহী জাহাজ ধাওয়া করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, এটি ভেনেজুয়েলার তথাকথিত ‘ডার্ক ফ্লিট’-এর অংশ, যা নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে তেল প্তানিতে ব্যবহৃত হয়।
ট্রাম্প বলেন, ‘জাহাজটি এগোচ্ছে, এবং শেষ পর্যন্ত আমরা এটি ধরব।
তিনি জানান, কোস্টগার্ড ইতোমধ্যে ভেনেজুয়েলার প্রায় ৪০ লাখ ব্যারেল তেল ও দু’টি জাহাজ জব্দ করেছে এবং সেগুলো যুক্তরাষ্ট্রের কাছেই রাখা হবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভাষ্য,
হয়তো আমরা তেল বিক্রি করব, হয়তো রেখে দেব, কিংবা কৌশলগত মজুতে ব্যবহার করব। জাহাজগুলোও আমরা রেখে দেব।
এর জবাবে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে ট্রাম্পের সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের উচিত ভেনেজুয়েলাকে হুমকি না দিয়ে নিজের দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক সমস্যার দিকে মনোযোগ দেয়া।
মাদুরো বলেন, তিনি (ট্রাম্প) যদি নিজের দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় সামলাতেন, তাহলে দেশ ও বিশ্বের জন্যই ভালো হতো।
এদিকে, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ভান গিলের সঙ্গে ফোনালাপে ক্যারিবীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতা নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছেন।
রাশিয়া সতর্ক করে বলেছে, এসব পদক্ষেপ আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও আন্তর্জাতিক নৌপরিবহনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, মস্কো বর্তমান পরিস্থিতিতে ভেনেজুয়েলার নেতৃত্ব ও জনগণের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ও সংহতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।যুক্তরাষ্ট্রের সবশেষ পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করেছে চীনও।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেন, এসব পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইনের ‘গুরুতর লঙ্ঘন’।
তিনি আরও বলেন, ‘জাতিসংঘ সনদের উদ্দেশ্য ও নীতির পরিপন্থি এবং অন্য দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা ক্ষুণ্ন করে এমন যেকোনো কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করে চীন।
নিজেদের বৈধ স্বার্থ রক্ষায় ভেনেজুয়েলার অবস্থানকে চীন সমর্থন করে বলেও জানিয়েছেন লিন জিয়ান।
Sharing is caring!