লোকমান ফারুক, রংপুর
রংপুরের কুকরুলের ইজতেমা ময়দান আজ সকালেই থমকে দাঁড়ায় একটি খবরের সামনে—দু’জন মুসল্লির মৃত্যু। লাখো মানুষের ভিড়ে বাতাস যেন আচমকা ভারী হয়ে ওঠে।
ঠান্ডা আর বয়সজনিত সমস্যায় তারা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন বলে জানালেন ৬ নম্বর হালকার জিম্মাদার ইঞ্জিনিয়ার আবুল হোসেন। মারা যাওয়া দুই মুসল্লি—পীরগঞ্জের সাঈদুর রহমান ও টাঙ্গাইলের তারা মিয়া। চল্লিশ দিনের চিল্লায় বের হয়ে তারা মিয়া রংপুরে এসে যুক্ত হয়েছিলেন ইজতেমায়।
পরশু পর্যন্ত যে যাত্রা ছিল দাওয়াতি, তা আজ নিস্তব্ধ সমাপ্তিতে থেমে গেল। পশুরাম থানার ওসি মাইদুল ইসলাম বললেন—’দু’জনই শ্বাসকষ্টজনিত কারণে স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। বাদ জোহর জানাজা শেষে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।’
জোহরের আগে মাঠ ঘুরে বেড়ালে দেখা যাচ্ছিল—খোলা তাবু, ভাঁজ করা বিছানা, আর পাশে দাঁড়িয়ে নীরব মানুষ।
যেন কেউ একটু আগে উঠে গেছেন; ফিরে আসবেন না জেনেও সবাই অপেক্ষা করছে। বাদ জোহর লাখো মানুষের কণ্ঠে উঠল জানাজার দোয়া। আকাশের দিকে উঠা হাতগুলোতে শোকের চেয়ে বেশি ছিল মেনে নেওয়ার সান্ত্বনা।
দুই মুসল্লির মরদেহ যখন ময়দান ছাড়ল, তখন ইজতেমার গুঞ্জন আবার স্বাভাবিক হয়ে উঠল—তবে বাতাসে রয়ে গেল নরম এক স্মৃতি: ভিড় যত বড়ই হোক, মৃত্যু কখনো ভিড়ে হারায় না; ঠিক ঠিক পথ খুঁজে নেয়।
Sharing is caring!