 
ডেস্ক রিপোর্ট
রংপুর রোদে পুড়ে, ধুলায় মিশে গ্রামের উঠোনে বসেছিলেন বৃদ্ধ, যুবক আর কিশোররা।
মঙ্গলবার, পীরগাছার কান্দি ইউনিয়নে দুপুরের সেই উঠোন বৈঠকে মাইকের সামনে দাঁড়িয়ে আখতার হোসেন বলছিলেন—’স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে গেছে, কিন্তু এই মাটির মানুষ এখনো পুরো অধিকার আর মর্যাদা পায়নি।’
বক্তব্যের ভেতর ছিল দীর্ঘশ্বাসের মতো ইতিহাস। সেদিন দুপুরে, শুষ্ক বাতাসে উড়ছিল ধানের খোসা আর অজস্র প্রত্যাশার শব্দ। জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেনের কণ্ঠে ছিল সেই প্রত্যাশারই অনুরণন- ‘সবার জন্য সমান অধিকার, মর্যাদা ও ন্যায়ের নিশ্চয়তা—এই ছিল স্বাধীনতার অঙ্গীকার। কিন্তু এখনো বৈষম্য আর অবহেলার চিত্রই বাস্তব।
এনসিপি সেই বৈষম্য দূর করতে কাজ করছে।’ তিনি থেমে চারদিকে তাকালেন, যেন শ্রোতাদের চোখে উত্তর খুঁজছেন। তারপর বললেন,’আজও ধনী-গরিবের ব্যবধান বিশাল। কেউ বৈধভাবে ধনী, কেউ অবৈধ পথে। কিন্তু গরিব মানুষ বঞ্চিতই রয়ে গেছে। যোগ্যতা ও সততা থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র সম্পদের অভাবে যদি একজন মানুষকে কোনো জায়গা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়—তাহলে সেটা স্বাধীন বাংলাদেশের চেতনা নয়। আমরা এমন দেশ চাই না, যেখানে মানুষের মর্যাদা টাকার মাপে মাপা হয়।’
বক্তব্যে তিনি প্রতিবেশীর প্রতি দায়িত্বের কথাও স্মরণ করিয়ে দিলেন—’প্রতিবেশীর হক সবার আগে। আমি জনগণের মধ্য থেকেই এসেছি, তাই জনগণের সমস্যাই আমার সমস্যা।
আখতার হোসেন নিজের অতীত সংগ্রামের কথাও টেনে আনেন। বলেন,’আমি দীর্ঘদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলাম। বহুবার জেল, নির্যাতন আর রিমান্ডের মুখোমুখি হয়েছি। সব কষ্ট সহ্য করেছি দেশের মানুষের মুক্তির জন্য।
আল্লাহর রহমতে আজ আমরা সেই জুলুম থেকে মুক্ত।’ বৈঠকের শেষদিকে তাঁর কণ্ঠে ঝরে পড়ল একধরনের অঙ্গীকার—’জনগণ আমার পাশে থাকলে, উন্নয়নবঞ্চিত প্রতিটি অঞ্চলকে অগ্রাধিকার দিয়ে গড়ে তুলব।
এনসিপি বিশ্বাস করে—জনগণের শক্তিই দেশের আসল শক্তি।’ বৈঠকের চারপাশে তখন বিকেলের আলো নরম হয়ে আসছিল। কেউ কেউ চায়ের কাপ হাতে মনোযোগে শুনছিলেন, কেউ মাথা নাড়ছিলেন সম্মতিতে। সেই মুহূর্তে পীরগাছার কান্দি ইউনিয়নের উঠোন যেন হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি—অধিকারবঞ্চনার গল্পে গাঁথা এক দীর্ঘ প্রতীক্ষার দৃশ্য।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পীরগাছা উপজেলার প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল আল মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক এবিএ মিজানুর রহমান ছানা, ও স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
	
		Sharing is caring!