চিটাগং কিংসের উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ মিঠুন বলটা বোলার হুসেইন তালাতের হাতে দিলেন। ফরচুন বরিশালের তানভীর আহমেদ সিঙ্গেল পূর্ণ করার আগেই ভেঙে গেছে নন স্ট্রাইকপ্রান্তের স্টাম্প। ততক্ষণে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার উদযাপন শুরু করে দিয়েছে বরিশাল। কারণ, তালাতের করা বলটা হয়েছে ওয়াইড।
মিরপুর শেরেবাংলায় টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে চিটাগং কিংস নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৯৪ রান করেছে। পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচে ফরচুন বরিশাল ৩ বল হাতে রেখে ৩ উইকেটের রুদ্ধশ্বাস জয় পেয়েছে। ম্যাচ শেষে চিটাগংয়ের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে সৈয়দ খালেদ আহমেদ বলেন, ‘দেখুন, দিনশেষে ম্যাচ হেরে গিয়েছি। কারও দোষ দেব না যে এখানে রান হয়নি। এই রান আমাদের ডিফেন্ড করা উচিত ছিল। স্কোরবোর্ডে যথেষ্ট রান ছিল। আমরা নিজেদের সেরাটা দিতে পারিনি।’
১৩ ম্যাচে ৬.৩২ ইকোনমিতে ১৫ উইকেট নিয়েছেন চিটাগং কিংসের আলিস আল ইসলাম। কিপটে বোলিংয়ের পাশাপাশি তাঁর ব্যাটিংয়েরও অবদান রয়েছে। খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে তাঁর ৭ বলে ১৭ রানের ক্যামিও ইনিংস, আরও স্পষ্ট করে বললে শেষ বলে চার মেরে চিটাগংকে ফাইনালে তুলেছিলেন তিনি। সেই ম্যাচে পায়ে চোট নিয়ে শেষ বল মোকাবিলা করেছিলেন ঠিকই। তবে গতকাল ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে খেলা হয়নি আলিসের। ২৮ বছর বয়সী রহস্যময়ী এই স্পিনার না থাকাটা চিটাগংকে ভুগিয়েছে বলে মনে করেন খালেদ। সংবাদ সম্মেলনে খালেদ বলেন, ‘আলিস না খেলতে পারা আমাদের জন্য বড় ক্ষতি হয়ে গেছে। আলিস খেলতে পারলে হয়তো দৃশ্যপট ভিন্নরকম হত। আমার কাছে মনে হয় পাওয়ার প্লেতে তার অভাব টের পেয়েছি। পাওয়ার প্লেতে কিছু রান হয়ে গেছে। সে থাকলে তেমন নাও হতে পারত। আমি মনে করি না যে রান কম হয়েছে বা বেশি হয়েছে।’
ফাইনালের স্নায়ুচাপ চিটাগং যে ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে, সেটা ক্রিকেটারদের শরীরী ভাষা দেখেই বোঝা যাচ্ছিল। অনেকগুলো সিঙ্গেল পরিণত হয়েছে দুই রানে। এমনকি খালেদের হাত ফস্কে চার হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। রুদ্ধশ্বাস ফাইনাল হারের ব্যাখ্যায় ৩২ বছর বয়সী এই পেসার বলেন, ‘দেখুন ম্যাচের মধ্যেই ছিলাম আমরা সবসময়। দুলছিল ম্যাচটা। একবার ম্যাচটা তাদের কাছে যাচ্ছিল। আরেকবার আমাদের কাছে আসছিল। শরীফুল এক ওভারে দুইটা উইকেট নেয়। তখন মনে হয়েছিল ম্যাচটা জিতে যাব। আমি যখন বোলিং করি, তখন ওপরে কয়েকটা বল এসেছিল। সেই ক্যাচগুলো ধরলে ম্যাচটা হয়তো আরও আগে আমাদের হাতে চলে আসত। এখানে তাই একটু ভুল হয়েছে।’
২০১৩ বিপিএলে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের কাছে হেরে রানার্সআপ হয়েছিল চিটাগং কিংস। ১২ বছর একই নামে চিটাগং ফাইনাল উঠলেও শিরোপাটা অধরাই থেকে গেল। খালেদের মতে এবারের বিপিএলে শুধু ফাইনালেই নয়, টুর্নামেন্টজুড়ে চিটাগংয়ের ফিল্ডিং বাজে হয়েছে। তিনি বলেন, ‘পুরো টুর্নামেন্টজুড়ে আমরা ভালো ফিল্ডিং করিনি। অনেক ক্যাচ ফস্কে গেছে। আগের ম্যাচেও অনেক ক্যাচ মিস হয়েছে। ক্রিকেটে এগুলো হয়। এগুলো ধরে লাভ নেই। হেরেই তো গেছি।’