ডেস্ক রিপোর্ট
মনপুরা উপজেলা উন্নত হওয়ার ৩২ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও ২৪ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্চিত দ্বীপ জেলা ভোলার অন্যটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ‘মনপুরা’ উপজেলার দেড় লাখ মানুষ। দিন-রাত মিলিয়ে মাত্র ৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছেন এই দ্বীপ উপজেলার বাসিন্দারা। ওজোপাডিকোর (ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি) দুটি জেনারেটরের মাধ্যমে মাত্র ৬০০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ দিতে সক্ষম। যেখানে কমপক্ষে ৫ মেগা ওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে।
নদীভাঙন রোধ ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও বিদ্যুতের তেমন কোনো উন্নয়ন ঘটেনি চারদিকে মেঘনা-বেষ্টিত এই উপকূলে। বিদ্যুতের দাবিতে এ উপজেলার বাসিন্দারা দফায় দফায় বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও বড় পরিসরে আন্দোলন করলেও ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেনি। অনেক তিক্ত অভিজ্ঞতার মাঝেও সম্প্রতি বিদ্যুৎ নিয়ে আশার আলো দেখছে মনপুরার দেড় লাখ মানুষ।
এরইমধ্যে বৈদ্যুতিক অবকাঠামোর পূর্ণ উপযোগিতা নিশ্চিত করণের বিষয়ে কারিগরি দিক, সুবিধাদি ও চ্যালেঞ্জসমূহ বিবেচনা করে মনপুরা উপজেলাকে জাতীয় গ্রীডের আওতায় আনতে মতামত ও সুপারিশ প্রদানের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। অবশেষে বিদ্যুৎ বিভাগ সংশ্লিষ্ট সচিব পর্যায়ের একটি টিম মনপুরায় পরিদর্শনে আসেন।
এ উপলক্ষে গত শুক্রবার উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সুশীল সমাজ ও গণমাধমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফজলে রাব্বির সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিদ্যুৎ বিভাগের (পরিকল্পনা) অতিরিক্ত সচিব নূর আহমদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব কেএম আলী রেজা।
এ সময় অতিথিদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- ওজোপাডিকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ জাকিরুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক (ওজোপাডিকো) প্রকৌশলী রোকনুজ্জামান,পরিচালক মনিরুজ্জামান, পরিচালক মো. আবদুল আজিজ, উপসচিব মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, নির্বাহী প্রকৌশলী নুর মোহাম্মদ ও সিনিয়র সহকারী সচিব হাসান সাদী।
সভায় বক্তারা বলেন, অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে মনপুরার মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটবে। আধুনিক সভ্যতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হবে এই অবহেলিত জনপদ। শিগগিরই নদীর তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে সংযুক্ত করে ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুতের আওতায় আনা হবে মনপুরা উপজেলাকে।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিদ্যুৎ বিভাগের (পরিকল্পনা) অতিরিক্ত সচিব নুর আহমদ বলেন, মনপুরার মানুষ যেন ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সুবিধা পায় সেই জন্য দুইটি টেকনিক্যাল রুট বিবেচনায় আছে।
একটি তজুমুদ্দিন উপজেলা থেকে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে চর কলাতলী হয়ে মনপুরা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপন করা।
অন্যটি হলো, চরফ্যাসন উপজেলা থেকে নদীর তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে সরাসরি মনপুরায় বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপন করা। তাছাড়া এখানে নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের উপযোগিতা অনিশ্চিত। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে মনপুরায় ২৪ ঘণ্টা জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ চালু হবে।
এ সময় স্থানীয়দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান মিলন মাতাব্বর, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা আমীমুল ইহসান জসীম, মনোয়ারা বেগম মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাহবুবুল আলম শাহীন ও প্রেসক্লাব সভাপতি অহিদুর রহমান প্রমুখ।
Sharing is caring!