৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৬ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ: পাহাড় ও সমুদ্রের মাঝপথে গড়ে উঠছে মনোমুগ্ধকর ভ্রমণপথ

admin
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৫, ১০:৪৬ অপরাহ্ণ
কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ: পাহাড় ও সমুদ্রের মাঝপথে গড়ে উঠছে মনোমুগ্ধকর ভ্রমণপথ

শাকুর মাহমুদ চৌধুরী, উখিয়া:

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতের সৌন্দর্য উপভোগে পর্যটকদের জন্য আরও এক নতুন আকর্ষণ হয়ে উঠছে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক।

উখিয়ার রেজু খালের মোহনায় দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে নতুন সেতুর নির্মাণকাজ। এ সেতু ও সড়কের কাজ শেষ হলে পাহাড় আর সমুদ্রের মাঝখানে গড়ে উঠবে এক মনোমুগ্ধকর ভ্রমণপথ, যা কেবল পর্যটকদের যাতায়াত সহজ করবে না, বরং কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পকেও দেবে নতুন মাত্রা।

মেরিন ড্রাইভ সড়ক ইতোমধ্যেই দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ভ্রমণপথ হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে। এই সড়ক ধরে ভ্রমণকারীরা একদিকে উপভোগ করতে পারে নীল সমুদ্রের অপরূপ রূপ, অন্যদিকে পাহাড়ি সবুজ প্রকৃতি। তবে দীর্ঘদিন ধরে রেজু খাল এলাকায় সেতুর অভাবে যাতায়াতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছিলেন স্থানীয়রা ও পর্যটকরা। নতুন সেতু নির্মাণ শেষ হলে সেই ভোগান্তি কমে যাবে।

জাতীয় দৈনিক নয়া দিগন্তের উখিয়া প্রতিনিধি সাংবাদিক হুমায়ুন কবির জুশান বলেন, এধরণের সেতু উন্নয় নির্মাণের কাজ যেনো স্থানীয় ও পর্যাটকদের দৃষ্টি নন্দিত করে তুলবে।

উখিয়া উপজেলার জালিয়া পালং ইউনিয়নের ইনানী এলাকার প্রবীণ সমাজসেবক ও মুফতি শাহ আলম বলেন, রেজু খালে সেতু নির্মাণ কেবল পর্যটকদের জন্য নয়, বরং স্থানীয়দের জীবনে বিরাট পরিবর্তন আনবে। মেরিন ড্রাইভের এ অংশ চালু হলে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি হবে।

শিক্ষক ও উপজেলা প্রেসক্লাব উখিয়া’র সভাপতি এম, আবুল কালাম আজাদ এর মতে, পাহাড় ও সমুদ্রের মাঝখানে এমন একটি আধুনিক ভ্রমণপথ গড়ে উঠলে স্থানীয় তরুণ সমাজ পর্যটনকে কেন্দ্র করে নতুন নতুন উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে উঠতে পারবে।

ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক শফিকুল ইসলাম শাওন বলেন, আমরা পরিবার নিয়ে মেরিন ড্রাইভে আসতে খুব ভালোবাসি। তবে রেজু খালের কাছে কিছুটা অসুবিধায় পড়তে হতো। এখন সেতু হলে আমাদের ভ্রমণ হবে আরও সহজ ও আনন্দদায়ক।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম থেকে আগত পর্যটক সাদিয়া পারভীন সীমা বলেন, কক্সবাজার মানেই এখন শুধু সৈকত নয়, মেরিন ড্রাইভও বড় আকর্ষণ। নতুন সেতু হলে আমরা টেকনাফ পর্যন্ত সমুদ্রের ধার ঘেঁষে ভ্রমণ করতে পারব, যা অসাধারণ এক অভিজ্ঞতা হবে।

পর্যটন ব্যবসায়ী আলহাজ্ব ফারুক আহমদ জানান, মেরিন ড্রাইভকে ঘিরে ইতিমধ্যেই বহু কটেজ, রিসোর্ট ও রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠেছে। সেতু নির্মাণ শেষে পর্যটকদের ভ্রমণ স্বাচ্ছন্দ্যময় হবে। এতে শুধু পর্যটন নয়, পুরো অর্থনীতিতেই ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা বলেন, সরকার পর্যটন খাতকে এগিয়ে নিতে নানা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। মেরিন ড্রাইভ সড়ক ও রেজু খালের সেতু সেই উদ্যোগের অংশ। এ প্রকল্প শেষ হলে কক্সবাজার হবে বিশ্বমানের একটি পর্যটন গন্তব্য।

সবমিলিয়ে বলা যায়, মেরিন ড্রাইভ সড়কের রেজু খাল সেতু নির্মাণ শুধু একটি উন্নয়ন প্রকল্প নয়, বরং কক্সবাজার-টেকনাফের পর্যটন সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত।

পাহাড় আর সমুদ্রের মাঝপথে এই ভ্রমণপথ একদিকে যেমন প্রকৃতিপ্রেমীদের মুগ্ধ করবে, অন্যদিকে দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নেও রাখবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

Sharing is caring!