১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৩শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ বৈধ: আপিল বিভাগ

admin
প্রকাশিত ডিসেম্বর ৪, ২০২৫, ০৬:১১ অপরাহ্ণ
অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ বৈধ: আপিল বিভাগ

Manual5 Ad Code

বিশেষ প্রতিনিধি

Manual7 Ad Code

সুপ্রিম কোর্টের অঙ্গনে সকালটা ছিল অন্য দিনের মতোই। কিন্তু আদালতকক্ষে জমাট নীরবতা বলছিল—আজকের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা শুধু আইনজীবীদের নয়, দেশের রাজনীতি পর্যন্ত টানটান করে রেখেছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ বৈধ কি না—এই প্রশ্নে আজ চূড়ান্ত কথা বলবে আপিল বিভাগ।

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ যখন বৈঠকে বসলেন, তখন অনেকের চোখেই ছিল অনিশ্চয়তার রেখা। আইনজীবীদের ফাইল নড়ার শব্দ, গ্যালারিতে দাঁড়ানো সাংবাদিকদের কলম প্রস্তুত হয়ে ওঠার মুহূর্ত—সব মিলিয়ে যেন এক নীরব উত্তেজনা।
শেষ পর্যন্ত অপেক্ষার অবসান। আদালত জানিয়ে দিল—হাইকোর্টের আদেশই বহাল। অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ ও গঠন প্রক্রিয়া বৈধ। এ নিয়ে আপিল বিভাগের আর কোনো হস্তক্ষেপ নেই। সাত বিচারপতি সর্বসম্মত।

Manual5 Ad Code

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক। অপর দিকে রিটের পক্ষে অ্যাডভোকেট মহসীন রশিদ তার যুক্তি তুলে ধরেন। ইন্টারভেনর হিসেবে দাঁড়ান ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, ড. শরীফ ভূঁইয়া ও ব্যারিস্টার এস এম শাহরিয়ার কবির।
তর্ক, পাল্টা তর্ক, সংবিধানের ব্যাখ্যা—সব মিলিয়ে শুনানি ছিল দীর্ঘ, বিস্তৃত এবং তীক্ষ্ণ।

Manual8 Ad Code

রায়ের পর আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, “আজকের আদেশের পর অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন বা কাজ নিয়ে প্রশ্ন তোলার আর কোনো সুযোগ রইল না।” তার কথা আদালতকক্ষের দেয়ালে ধাক্কা খেয়ে যেন আরও দূরে পৌঁছাল—বাইরের রাজনীতি পর্যন্ত।
এই রায় ছিল প্রত্যাশিত? নাকি টানটান উত্তেজনার পর এক শান্ত উপসংহার? আদালতের ভাষ্য ছিল সোজাসাপ্টা—হাইকোর্ট সঠিক সিদ্ধান্তই দিয়েছিল। কারণ দেশের জনগণেই বৈধতার সর্বোচ্চ উৎস।

Manual3 Ad Code

এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরেই অন্তর্বর্তী সরকারের শপথের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আইনজীবী মহসীন রশিদ রিট করেছিলেন। হাইকোর্ট তখন রিট খারিজ করে স্পষ্ট ভাষায় বলেছিল—জনগণের স্বীকৃতি পাওয়া সরকারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। সেই আদেশের বিরুদ্ধেই লিভ টু আপিল করেছিলেন তিনি। অবশেষে সেই পথও আজ বন্ধ হয়ে গেল।

আদালতকক্ষ তখন আর আগের মতো ছিল না—টানটান উত্তেজনা ধীরে ধীরে গলে যাচ্ছিল। যেন দৃশ্য শেষ হচ্ছে, কিন্তু গল্পের ভার এখন দেশের রাজনীতির কাঁধে।সবশেষে এক নীরব সত্যই যেন ভেসে ওঠে—সংবিধানের আদালত তার কাজ করেছে। এবার পালা তাদের, দেশের নেতৃত্ব যাদের কাঁধে। সিদ্ধান্তের এই পরিসমাপ্তি এক নতুন অধ্যায়ের দিকে দরজা খুলে দিল, যার পরিণতি জানার অপেক্ষায় এখন পুরো দেশ।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code