৩রা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১১ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

দ্বিতীয় বারের মতো সন্তান বিক্রি করতে চান এক মা।

admin
প্রকাশিত আগস্ট ২৩, ২০২৫, ০৫:১৮ অপরাহ্ণ
দ্বিতীয় বারের মতো সন্তান বিক্রি করতে চান এক মা।

মোঃ ইকবাল মোরশেদ, স্টাফ রিপোর্টার

কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার শ্রীমন্তপুর এলাকায় অভাবের তাড়নায় সন্তান বিক্রি করবেন নিশি আক্তার নামের একজন মা।

এর আগের রাবেয়া নামের তার প্রথম সন্তানটি তিনি নয় মাসে বয়সে বিক্রি করেন। এবারের সন্তানের বয়স ২৯ দিন। এখনও তার নাম রাখেননি। তার দাবি তাকে খাবার দিতে পারবেন না তাই বিত্তবান কাউকে দিয়ে দিবেন। সেখানে সন্তান খেয়ে পরে বেঁচে থাকবে। পাশাপশি তারা খুশি হয়ে কিছু দিলে তিনি স্বামীর ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন। এছাড়া বাকি দুই সন্তানের খাবার যোগাতে পারবেন।

নিশি আক্তার জানান, নিশির বাবার বাড়ি কুমিল্লা লাকসাম উপজেলার বাতাখালী গ্রামে। তার বাবার নাম নুরুল ইসলাম। তিনি তিন বোন দুই ভাইয়ের মধ্যে তৃতীয়। বাবার পরিবারের অবস্থাও ভালো নয়। বাবাও প্যারালাইজড। স্বামী ইউছুফ মিয়া কুমিল্লা নাঙ্গলকোট উপজেলার শাকতলী গ্রামের বাসিন্দা। শ্রীমন্তপুরের ভাড়া বাসায় তারা থাকতেন। মাঝে মাঝে মধ্যে আসলেও সংসারের খরচ দিতেন না। সম্প্রতি এনিয়ে কথা কাটাকাটির পর মারধর করে তাকে তিন তালাক বলে চলে যান। তার দেন মোহরও দেননি। বিয়ে সংক্রান্ত কোন কাগজপত্রও নেই। স্বামী তা নিয়ে গেছেন। সাত বছর বয়সী বড় মেয়ে রাবেয়াকে এক প্রবাসী পরিবারের নিকট বিক্রি করেন। তারা মেয়েকে নিয়ে বিদেশে থাকেন। মেঝ মেয়ে পাঁচ বছরের লামিয়া নিশির মায়ের সাথে লাকসামে থাকেন। দুই বছরের সামিয়া ও ২৯ দিনের একজন তার সাথে রয়েছেন। তিনি মানুষের বাসায় কাজ করে সন্তানদের খাওয়ান। তবে চতুর্থ সন্তান হওয়ার পর এখনও কাজে যেতে পারেননি।

নিশি আক্তার জানান, নিশির বাবার বাড়ি কুমিল্লা লাকসাম উপজেলার বাতাখালী গ্রামে। তার বাবার নাম নুরুল ইসলাম। তিনি তিন বোন দুই ভাইয়ের মধ্যে তৃতীয়। বাবার পরিবারের অবস্থাও ভালো নয়। বাবাও প্যারালাইজড। স্বামী ইউছুফ মিয়া কুমিল্লা নাঙ্গলকোট উপজেলার শাকতলী গ্রামের বাসিন্দা। শ্রীমন্তপুরের ভাড়া বাসায় তারা থাকতেন। মাঝে মাঝে মধ্যে আসলেও সংসারের খরচ দিতেন না। সম্প্রতি এনিয়ে কথা কাটাকাটির পর মারধর করে তাকে তিন তালাক বলে চলে যান। তার দেন মোহরও দেননি। বিয়ে সংক্রান্ত কোন কাগজপত্রও নেই। স্বামী তা নিয়ে গেছেন। সাত বছর বয়সী বড় মেয়ে রাবেয়াকে এক প্রবাসী পরিবারের নিকট বিক্রি করেন। তারা মেয়েকে নিয়ে বিদেশে থাকেন। মেঝ মেয়ে পাঁচ বছরের লামিয়া নিশির মায়ের সাথে লাকসামে থাকেন। দুই বছরের সামিয়া ও ২৯ দিনের একজন তার সাথে রয়েছেন। তিনি মানুষের বাসায় কাজ করে সন্তানদের খাওয়ান। তবে চতুর্থ সন্তান হওয়ার পর এখনও কাজে যেতে পারেননি। তিনি বলেন, ভাড়াটিয়া সেলিম মিয়ার পরিবার ভালো মানুষ। তাই দেড় মাস ধরে খাবার খাওয়াচ্ছেন। তাদের বাসা ভাড়াও কয়েক মাস দিতে পারছেন না। ছোট মেয়েটাকে কাউকে দিতে পারলে মেয়ে খেয়ে বেঁচে থাকবে। সাথে তিনি মেয়ের বাপের রেখে যাওয়া ২০ হাজার টাকার ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, তারা থাকেন ছোট একটি কক্ষে। তাদের বাসার সম্বল বলতে কিছু ছেঁড়া কাপড়। নিশি যখন এই প্রতিবেদকের সাথে কথা বলছেন তখন কোলে থাকা শিশুটিও মাঝে মাঝে কান্না করছে। সেও হয়তো মায়ের কষ্টে কাঁদছেন, না হয় মাকে ছেড়ে যেতে হবে সেই আতঙ্কে কাঁদছেন।

এদিকে মায়ের পাশে হাঁটছেন দুই বছরের সামিয়া। তার মায়া ভরা মুখ। পৃথিবীর কোন অভাব অনটন বোঝার বয়স এখনও তার হয়নি। মাকে কেউ খাওয়া দিলে সেখান থেকে সেও ভাগ পায়। বাসার মালিকের স্ত্রী নুর মহল বেগম বলেন, স্বামী প্রায় মারধর করতো। পরে তালাক দিয়ে চলে যায়। হাসপাতালের অপারেশনের টাকা আমরা চাঁদা তুলে পরিশোধ করি। এখন নিজেরা খাবার খাইয়ে যাচ্ছি।

প্রতিবেশী এম ফিরোজ মিয়া ও মনির হোসেন বলেন, নিশি তার প্রথম সন্তানটি বিক্রি করে ফেলেছেন। এখন বলছেন অভাবের তাড়নায় তার চতুর্থ সন্তানটিও বিক্রি করে দিবেন। একটি ঘরের ব্যবস্থা ও আর্থিক সহায়তা দিলে সে হয়তো সন্তান বিক্রির পথে হাঁটবে না।

সদর দক্ষিণ উপজেলার নারী বিষয়ক কর্মকর্তা পারভীন আক্তার বলেন, আমাদের অফিসের কাছাকাছি শ্রীমন্তপুর। তাকে অফিসে আসতে বলবেন। তাকে স্বাবলম্বী হওয়ার ট্রেনিংয়ের সুযোগ দেয়া হবে। এছাড়া তার জন্য আর কি করা যায় দেখি। আইনি সহায়তার বিষয়টিও দেখবো।

সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবাইয়া খানম এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, এই নারী তার এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা নন। তাই তাকে লাকসাম উপজলায় যোগাযোগের পরামর্শ দেন।

লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাউছার হামিদ বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবো। নিশি আক্তারকে সহযোগিতার চেষ্টা করবো।

Sharing is caring!