২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৫ই রজব, ১৪৪৭ হিজরি

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘আল ই’তিসাম–২১’: বিদায়ের মঞ্চে শিক্ষা, প্রার্থনা ও নতুন জীবনের প্রত্যয়

admin
প্রকাশিত নভেম্বর ৬, ২০২৫, ০২:০৮ অপরাহ্ণ
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘আল ই’তিসাম–২১’: বিদায়ের মঞ্চে শিক্ষা, প্রার্থনা ও নতুন জীবনের প্রত্যয়

Manual2 Ad Code

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘আল ই’তিসাম–২১’: বিদায়ের মঞ্চে শিক্ষা, প্রার্থনা ও নতুন জীবনের প্রত্যয়

Manual7 Ad Code

বিশেষ প্রতিনিধি: ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ প্রাঙ্গণ জেগে উঠেছিল বিদায়ের আবেগে। ক্যাম্পাসে ব্যস্ত পদচারণা, হাতে ব্যানার, মুখে হাসি—’২১ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সমাপনী আয়োজন ‘আল ই’তিসাম–২১’ যেন হয়ে উঠেছিল এক উৎসবের দিন।

সকালে সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ‘শিক্ষাজীবনের সমাপ্তি মানেই নতুন জীবনের সূচনা। ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধের আলোয় নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়াই এখন তোমাদের দায়িত্ব।’

উপ–উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. হারুনর রশীদ খান বলেন, ‘কোরআন কেবল ধর্মীয় গ্রন্থ নয়, এটি জীবনযাপনের পূর্ণ দিকনির্দেশনা। সেই আলোয় এগোতে পারলেই সফলতা আসবে।’

দিনের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফার্মেসি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মো. সাইফুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘মানুষের কল্যাণে প্রয়োগই শিক্ষার পরিণতি।’
বিশেষ আলোচক সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. তানভীর হোসাইন যোগ করেন, ‘নৈতিকতা ও জ্ঞানচর্চা পাশাপাশি চললে তবেই সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন সম্ভব।’

সভাপতিত্ব করেন ব্যাচের শিক্ষার্থী তালহা মাহমুদ। কোরআন তেলাওয়াত করেন ক্বারী মুস্তাকিম বিল্লাহ; দোয়া পরিচালনা করেন মুফতি আব্দুল কুদ্দুস। মিলনায়তনে তখন ভেসে বেড়াচ্ছিল গাম্ভীর্য আর বিদায়ের মৃদু বিষণ্নতা।

Manual2 Ad Code

সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে পড়তেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে শুরু হয় দ্বিতীয় পর্ব। একই সঙ্গে আধ্যাত্মিক মাহফিল ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন শতাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য প্রফেসর ড. রেজাউল করিম এবং মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি প্রফেসর শরিফ মোহাম্মদ খান।

ধর্মীয় আলোচনা করেন শায়েখ প্রফেসর মোখতার আহমেদ, ক্বারী আহমাদ বিন ইউসুফ আল-আজহারী ও কবি মুহিব খান। তাঁদের বক্তব্যে কখনও যুক্তির দৃঢ়তা, কখনও আবেগের আহ্বান—শ্রোতাদের মনে সৃষ্টি করে গভীর প্রভাব।

অনুষ্ঠানের পুরো পরিবেশে ছিল ধর্মীয় আবহ, তবে কেউ কেউ নিঃশব্দে প্রশ্ন রাখেন—শিক্ষা কি শুধুই ধর্মীয় অনুশাসনে সীমাবদ্ধ থাকবে, নাকি মুক্ত চিন্তার বিকাশও হবে এর অন্তর্গত? এই বিপরীত সুরই অনুষ্ঠানের ভারসাম্য তৈরি করেছে—যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাঙ্গনও এক চিন্তার দ্বন্দ্বের প্রতিফলন।

Manual7 Ad Code

শেষ প্রহরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মৃদু সুরে মিলিয়ে গেল সব কোলাহল। কেউ আবৃত্তি করছে বিদায়ের কবিতা, কেউ চোখ মুছছে অজানা ভবিষ্যতের শঙ্কায়।
উপাচার্য মঞ্চ ছাড়ার আগে বললেন, ‘এই তরুণরাই আমাদের আশার প্রদীপ।’

Manual3 Ad Code

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আকাশে তখন ছড়িয়ে পড়েছে অগণিত তারা। বিদায়ের মাঝেই শিক্ষার্থীরা প্রতিজ্ঞা করছিল—এই আলোই হবে তাদের আগামী জীবনের পথচলার দিশারি।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code