১৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১লা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

মনপুরার মেঘনায় নিষেধাজ্ঞা শেষ পর্যায়ে প্রণোদনার চাল পাননি! কষ্টে জীবন যাপন জেলেদের

admin
প্রকাশিত এপ্রিল ২৯, ২০২৫, ০৫:২৬ অপরাহ্ণ
মনপুরার মেঘনায় নিষেধাজ্ঞা শেষ পর্যায়ে প্রণোদনার চাল পাননি! কষ্টে জীবন যাপন জেলেদের

Manual7 Ad Code

মোঃ কামরুল হোসেন সুমন,ভোলা:

Manual4 Ad Code

ভোলা জেলার মেঘনা-তেতুলিয়া নদীতে দুই মাস মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা জারী করে সরকার। সেই নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে আগামী ৩০ এপ্রিল। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার শেষ পর্যায়েও জেলেদের ভাগ্যে জুটেনি জেলে পুর্নবাসনের সরকারী বরাদ্ধ কৃত চাউল। তবে কবে নাগাদ চাল পাবেন সে ব্যাপারে খোদ মৎস্য বিভাগও কিছু বলতে পারছে না ।এতে ধার-দেনা করে কোন মতে সংসার চালিয়ে শেষ সময়ে হাহাকারে পড়েছে জেলে পরিবার গুলো ।
জানা গেছে, ইলিশের অভয়াশ্রম হিসেবে ভোলার মেঘনা এবং তেঁতুলিয়া নদীর ১৯০ কিলোমিটার এলাকায় সব ধরনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মৎস্য অধিদপ্তর। প্রতিবছর মেঘনা- তেঁতুলিয়া সব ধরনের মাছ শিকারে ৬০ দিনের (১লা মার্চ- ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত) নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। মনপুরা উপজেলায় সরকারিভাবে নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন ১৪ হাজার ৩ শত ৪৭ জন।
গত ১লা মার্চ- ৩০ এপ্রিল ৬০ দিন মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকায় দুর্দিন যাচ্ছিল মনপুরার মেঘনা নদীতে মাছ শিকারের জেলেরা । এই দীর্ঘ সময় ধরে ধার-দেনা করে সংসার চালানো ছিল তাদের কাছে বড় কষ্টের বিষয়। এ সময় জেলেদের জন্য সহায়তা হিসেবে জনপ্রতি ৮০ কেজি করে চাল বরাদ্দ ছিল। প্রথম কিস্তিতে ৪০ কেজি চাল দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা শেষ সময়ে এখনো দ্বিতীয় কিস্তির ৪০ কেজি চাল পাননি তারা। কবে নাগাদ পাবেন সে বিষয়েও কোনো ধারণা নেই জেলেদের।
এদিকে নিষেধাজ্ঞার সময় মাছ ধরা থেকে বিরত রাখতে ২৩ ফেব্রুয়ারী মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার ভোলার মনপুরায় বিচ্ছিন্ন ঢালচর জেলে সমিতি ও ২৪ ফেব্রুয়ারী উপজেলার উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নে দক্ষিণ চরগোয়ালিয়া আর্দশ মৎস্যজীবি গ্রাম সংগঠনের সদস্যদের সাথে মতবিনিময় সভা করে আশ্বাস দেন জেলেরা নিষেধাজ্ঞা মেনে নদীতে মাছ ধরলে, সরকারী পুর্নবাসনের চাউল সহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে। এছাড়াও জেলেদের দাবীর প্রেক্ষিতে পুর্নবাসনের চাউল প্রাপ্তি জেলের সংখ্যা বাড়ানো চেষ্ঠা করা হবে বলে উপদেষ্টা আশ্বস্ত করেন।

Manual6 Ad Code

এদিকে মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ উপদেষ্টার আশ্বাসের পরও নিষেধাজ্ঞার শেষ সময়ও পুর্নবাসনের চাউল না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছে জেলেরা।
জেলে মো রাকিব বলেন, কিছু দিন পর পর সরকার নিষেধাজ্ঞা দেয়, আমরা সেই নিষেধাজ্ঞা মানি। কিন্তু সরকার যে চাল আমাদেরকে দেয় এই ৬০ দিনের নিষেধাজ্ঞার চাল ১ বারে ৪০ কেজি পাইছি, এখনো ১ বারের চাউল পাইনি ।
জেলে রিয়াজ মাঝি , নোমান মাঝি , বাচ্চু মাঝি , আজগর মাঝি, সহ অনেকে জানান, উপদেষ্টার আশ্বাসের পরও মনপুরার বেশিরভাগ জেলে ১ম কিস্তির চাউল পায়নি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হতে আর একদিন বাকি এখনও দ্বিতীয় কিস্তির চাউল পায়নি কোন জেলে। ধার-দেনা করে সংসার চালাচ্ছি। জেলেদের কথা মনে রাখেনি উপদেষ্টা। তাই জেলেদের চাউল বরাদ্ধের কথা ভুলে গেছেন। এভাবে জেলেদের সাথে করলে আগামীতে সরকারী নিষেধাজ্ঞা মানতে পারব না বলে জানান জেলেরা।

Manual2 Ad Code

মনপুরার জেলে নেতারা অভিযোগ করেন বলেন, মৎস্য উপদেষ্টা জেলেদের বরাদ্ধের সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্ঠা করবেন বলে আশ্বস্ত করেছিলেন কিন্তু ওল্টো আগের চেয়ে বরাদ্ধের সংখ্যা কমে গেছে। আগামীতে নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেদের মাছ ধরা থেকে বিরত রাখা সম্ভব হবে না বলে জানান জেলে নেতারা।নিবন্ধিত জেলের বাহিরো অনেক জেলে রয়েছে এই উপজেলা ।
এই ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ কামাল হোসেন জানান, ২য় কিস্তি জেলে পুর্নবাসনের চাউল বরাদ্ধ না পাওয়ায় জেলেদের দেওয়া সম্ভব হয়নি। ১ম কিস্তির চাউল অধিকাংশ জেলেরা পায়নি এমন প্রশ্নে তিনি জানান বরাদ্ধ যা দেওয়া হয়েছে তা আনুপাতিকহারে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে জেলেদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, মনপুরা উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ১৪ হাজার ৩ শত ৪৭ জন। এর বিপরীতে সরকার ১ম কিস্তিতে ৬ হাজার ৬ শত জেলের জন্য ৪০ কেজি করে চাউল বরাদ্ধ দেয়। এতে জেলেদের বিরাট অংশ ১ম কিস্তির পুর্নবাসনের চাউল পায়নি। এদিকে ২য় কিস্তির চাউল বরাদ্ধ না পাওয়ায় জেলেদের মধ্যে বিতরন করা সম্ভব হয়নি।বরাদ্দকৃত চাউল না আসায় উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। চাউল আসলে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিতরন করা হবে বলে জানান মৎস্য কর্মকর্তা।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code