৪ঠা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৩ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

সংসদ নির্বাচন ঘিরে সিলেট-৪ আসনে প্রার্থীদের প্রচানায় সরগম

admin
প্রকাশিত মার্চ ১৩, ২০২৫, ১২:০৫ পূর্বাহ্ণ
সংসদ নির্বাচন ঘিরে সিলেট-৪ আসনে প্রার্থীদের প্রচানায় সরগম

Manual4 Ad Code

সিলেট অফিস::  এখনো ঘোষণা হয়নি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন তারিখ। ঘোষণা হয়নি নির্বাচনের তফশিল, চুড়ান্ত হয়নি দলীয় প্রার্থীর নাম। কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি তারেক রহমানের নির্দেশে দলের সকল সম্ভাব্য প্রার্থীরা রয়েছেন নিজ নিজ প্রচারণায় ব্যস্থ। সেই নির্দেশনা পেয়ে ত্যাগী ও কারা নির্যাতিত অনেক প্রার্থীর সাথে পাল্লা দিয়ে প্রচারণার মাঠে এসেছেন বেশ কয়েকজন উড়ন্ত অথিতি পাখি।

Manual1 Ad Code

এরা মাঠে প্রচারণায় ত্যাগী আর কারা নির্যাতিত প্রার্থীদের নিয়ে করছেন আলোচনা সমালোচনা, যার ফলে বিএনপির ঘরের বিরোধ পরে জানতে পারছে। এ ক্ষেত্রে অনেকে নিজেদের টাকার গরম দেখিয়ে দলীয় কেন্দ্রীয় সভাপতির নির্দেশনাকেও বৃদ্ধাঙ্গলী প্রর্দশণ করছেন বলে তৃণমূলের একাধিক বিএনপির কর্মী অভিযোগ করেন। দল থেকে যাদের বিভিন্ন কারণে বহিস্কার করা হয়েছে তাদের নিয়ে একটি বিরোধী জোট করতে কাজ করছেন অনেকে। সিলেট-৪ আসনের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে গত এক সপ্তাহে যে দৃশ্যপট উঠে এসেছে।

সাধারণ ভোটাররা কোন অথিতি পাখি আসনের এমপি হিসাবে দেখতে চান না। যারা গত ১৭ বছর দিনে আওয়ামী লীগ রাতে বিএনপি করেছেন তাদেরকে চায় না তৃণমূল বিএনপি। তবে আসনে নির্বাচনে বিএনপির কোন প্রার্থীকে জয়ী হতে হলে বাংলাদেশ জামায়াতের ইসলামী সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক সাবেক জৈন্তাপুর উপজেলার একাধিক বারের চেয়ার্যমান মাওলানা লোকমান আহমদকে ঠেক্কা দিতে হবে।

Manual3 Ad Code

কারণ আসটিতে জামায়াতের কোন বিরোধী প্রার্থী নেই। অপরদিকে আসন্ন নির্বাচন ঘিরে সিলেটের প্রাকৃতি ঘেরা আসন সিলেট-৪ (গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জ) আসনে নির্বাচনের হাওয়া বেশ সরগম হয়ে উঠেছে। নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের ঘিরে তৃণমূলে বিভেদ সৃষ্টি হতে শুরু করেছে। অনেক প্রার্থী নির্বাচনের লোভে তিনটি উপজেলার পাথর কোয়ারী লুটপাটের খলনায়কদের সাথে রাতের অন্ধকারে মিটিং করতে দেখা গেছে। যারাদের জন্য কারানির্যাতিত, জুলুম, নিপিড়ন, গায়েবী মামলার আসামী হয়েছিলেন হাজার-হাজার নেতাকর্মী। তারাও এখন নির্বাচনে এমপি হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে, এ তালিকায় নাকি আছেন একাধিক হত্যা মামলার আসামীর স্বজনরাও। যাদের স্বজনরা বিগত সরকারে সাথে হাত মিলিয়ে লুটেপুটে খেয়েছেন এই আসনের প্রাকৃতিক সম্পদ। যে যাই বলুক দলীয় মনোনয়ন যুদ্ধে কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। ফলে দলীয় কোন্দল বিএনপির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসাবে দেখছেন সাধারণ ভোটারগণ।

জানা যায়, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ২৫টি ইউনিয়ন নিয়ে সিলেট-৪ আসন গঠিত। প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর বৃহত্তম পাথর কোয়ারি ভোলাগঞ্জ, জাফলং, বিছনাকান্দি ও শ্রীপুর এই আসনে রয়েছে। দেশের অন্যতম স্থলবন্দর তামাবিল এই আসনে অবস্থিত। তাই সব রাজনৈতিক দলের কাছেই আসনটির গুরুত্ব বেশি। জুলাই অভ্যুত্থানের পর বদলে গেছে রাজনীতির মাঠের হালচাল। আওয়ামী লীগ ও তাদের মিত্ররা ভোটের মাঠে নেই। ফলে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে মাঠ গোছাতে ব্যস্ত বিএনপি, জামায়াত ও সমমনা দলগুলো। ভোটাররা মনে করছেন আগামী নির্বাচনে দীর্ঘদিনের মিত্র বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। এমন সমীকরণ সামনে রেখেই প্রস্তুতি নিচ্ছে দল দুটি। এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হাফ ডজন নেতা মাঠে রয়েছেন।

বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম আলোচিত হচ্ছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন, সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কমিটির অন্যতম সদস্য কারা নির্যাতিত নেতা বদরুজ্জামান সেলিম। তিনি তৃণমূল বিএনপির নেতা হিসাবে সর্বমহলে পরিচিত। বিএনপির ছাত্ররাজনীতি দিয়ে শুরু করে এখনো তিনি বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত রয়েছেন তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীর কাছে তার রয়েছে বেশ পরিচিতি। বারবার কারানির্যাতনের স্বীকার বদরুজ্জামান সেলিম ইতিমধ্যে নির্বাচনের জন্য এ আসনটিতে বেশ জোরে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

Manual8 Ad Code

সাধারণ ভোটারদের কাছেও নামটি বেশ সাড়া ফেলেছে বলে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে। একজন পরিচন্ন রাজনৈতিক নেতা হিসাবে বদরুজ্জামান সেলিম সর্বমহলে পরিচিত হওয়া সাধারণ ভোটাদের মাঝে সাড়া ফেলে দিয়েছেন। বিরোধী শিবিরে তাকে নিয়ে এক রকম উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। কারণ তিনি বিগত দিনে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচন করতে মনোনয়নপত্র দাখিল করে ছিলেন। পরে দলীয় হাই কমান্ডের নির্দেশে পরে সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে সমর্তন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাড়ান। তাই একজন অভিজ্ঞ রাজনৈতিক আর ত্যাগী নেতা হিসাবে তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীরা এ আসনটিতে বদরুজ্জামান সেলিমকে সাদরেই গ্রহণ করে নিয়েছে।

আরেক প্রার্থী হচ্ছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী। তিনিও সিলেট-৪ থেকে নির্বাচনে ঘোষণা দিয়ে ছিলেন।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি সিলেট সিটি করপোরেশনে নির্বাচন করবেন বলে দলীয় একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

এ দুজনই বিএনপির মাঠের অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। বারবার নির্যাতন, নিপিড়ন, মামলা, মামলার পর বিএনপির আদর্শ থেকে সরে যাননি। আরেক প্রার্থী হচ্ছেন সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের দুই বারের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম চৌধুরী। তবে হাকিম চৌধুরীকে নিয়ে তৃণমূল বিএনপির কর্মীদের মাঝে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

নতুন করে নির্বাচনী এ আসনটিতে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার কামরুজ্জামান সেলিম। কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক এমপি প্রয়াত দিলদার হোসেন সেলিমের সহধর্মিনী এডভোকেট জেবুন্নাহার সেলিম, বিএনপি নেতা আব্দুল হক ও সিলেট জেলা বিএনপির উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য প্রবাসী হেলাল উদ্দিন আহমদ।

হেলাল উদ্দিন আহমদ একজন প্রবাসী। তিনি মাঠের রাজনীতিতে থেমন সক্রিয় না থাকলে ৫ আগষ্টের পর সময় সুযোগ বুঝে নেমেছেন নির্বাচনী মাঠে। বিগত ১৭ বছর আওয়ামী লীগের শাসন আমলে তিনি কোনদিন মাঠের রাজনীতিতে সরাসরি না থাকলেও এখন উড়ন্ত পাখি হয়ে তিনিও এসেছেন সংসদ নির্বাচন করতে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

প্রত্যেকেই দলের বার্তা ও নিজের ইশতেহার, প্রতিশ্রিুতি নিয়ে জনগণের দোরগোড়ায় যাচ্ছেন। সামাজিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠানের পাশাপাশি সাংগঠনিক নানা কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরছেন। এমনটা জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।

Manual3 Ad Code

সিলেট-৪ আসনে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছেন বদরুজ্জামান সেলিম। তিনি দলীয় মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতে পারলে পিছিয়ে পড়া তিন উপজেলার চিত্র পাল্টে দিতে পারবেন এমনটা মনে করছেন স্থানীয় লোকজন।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code