
◻️ জসিম তালুকদার, চট্টগ্রাম :
প্রশাসনিক অনুমোদন ও দলিল ছাড়াই মন্দির নির্মাণের উদ্যোগে স্থানীয়দের বাধা, বিজিবির হস্তক্ষেপে কাজ বন্ধ।
কাগজে-কলমে জমির মালিক না হয়েও মন্দির ও প্রচার কেন্দ্র নির্মাণে নেমে স্থানীয়দের বাঁধার মুখে পড়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিতর্কিত সংগঠন ইসকন। প্রশাসনিক অনুমোদন বা বৈধ মালিকানা দলিল ছাড়াই চট্টগ্রাম বিভাগের খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলায় পরিত্যক্ত মন্দির পূর্ণনির্মাণ উদ্যোগ নেন এই বিতর্কিত সংগঠনটি।
গত শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকালে আদি ত্রিপুরা পাড়ায় সুকান্ত চক্রবর্তীর নেতৃত্বে ইসকনের একদল কর্মী নির্মাণকাজ শুরু করলে স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রবল আপত্তির মুখে বিজিবি নির্মাণ বন্ধ করে দেয়।
স্থানীয়রা বিজিবি’র কাছে অভিযোগ জানান যে, কোনো প্রশাসনিক অনুমোদন বা জমির বৈধতা ছাড়াই এই কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। বিজিবি প্রমাণপত্র চাইলেও ইসকনের পক্ষ থেকে তা দেখাতে ব্যর্থ হয়। ফলে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিজিবি অবিলম্বে কাজ বন্ধের নির্দেশ দেয়।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) স্থানীয় সমাজ সেবক হরি দাস দৈনিক স্বাধীন ভাষার জেলা প্রতিনিধি জসিম তালুকদার কে বলেন,পানছড়িতে হিন্দু সম্প্রদায়ের মোট জনসংখ্যা প্রায় ১৪,৭৪০ হলেও ইসকনের অনুসারী খুবই সীমিত। এমনকি পানছড়িতে ইসকনের কোনো আনুষ্ঠানিক কমিটিও নেই। এখানে ১০টি মন্দির রয়েছে। তাই প্রশ্ন উঠেছে- কে বা কারা, কী উদ্দেশ্যে এই গোপন নির্মাণ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছিল?
বিশ্লেষকদের মতে, পানছড়ির মতো স্পর্শকাতর এলাকায় ইসকনের এমন গোপন তৎপরতা কেবল ধর্মীয় বিভাজন সৃষ্টি নয়,বরং আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্যও মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। পার্বত্য অঞ্চলের বৈরী পরিবেশ ও সীমান্তবর্তী অস্ত্র চোরাচালানের বাস্তবতায়, এই ধরনের অনুমতি বিহীন ধর্মীয় কার্যক্রম গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয় সনাতনী নেতারাও জানান, এই নির্মাণের ব্যাপারে তাদের কোনো অবহিত করা হয়নি। বরং তাদের আশঙ্কা, ইসকন একটি ক্ষুদ্র অংশের গোঁড়ামিকে ব্যবহার করে বৃহত্তর সম্প্রদায়ের ঐক্য বিনষ্টের চেষ্টা করছে।
বিশেষ করে পানছড়িতে পার্বত্য জনসংহতি সমিতি (জেএসএস-সন্তু) ও ইউপিডিএফ (প্রসিত) গ্রুপের বিদ্যমান দ্বন্দ্বের মাঝে ধর্মীয় আবরণে নতুন উত্তেজনার উসকানি বড় ধরনের নিরাপত্তা সংকট তৈরি করতে পারে বলে তাদের ধারণা।
প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকরা মিডিয়াকে জানান, ধর্মীয় আড়ালে অগোচরে গোঁড়ামি ও প্রভাব বিস্তারের এই চেষ্টাকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। স্থানীয় শান্তি-শৃঙ্খলা অক্ষুণ্ণ রাখতে প্রশাসনের অনুমতি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা ছাড়া এ ধরনের ধর্মীয় নির্মাণ কার্যক্রম কোনোভাবেই মেনে নেওয়া উচিত নয়।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, বিজিবি নির্দেশে ইসকনের নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও প্রশাসনিক অনুমতি সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে।
Sharing is caring!