
গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি
গাইবান্ধা সদর উপজেলার পুরাতন বাদিয়াখালী ইউনিয়নের রিফাইতপুর দক্ষিণপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলতাব হোসেনের বিরুদ্ধে একের পর এক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
এসব অনিয়মের কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ভেঙে পড়েছে, শিক্ষার্থী সংখ্যা কমে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১১ জনে।
অভিযোগ রয়েছে, নিয়ম অনুযায়ী প্রতিদিন সকাল ৯টায় ক্লাস শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেশিরভাগ শিক্ষক সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে বিদ্যালয়ে আসেন। আবার বিকেল ৪টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত পাঠদান চলার কথা থাকলেও বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটের আগেই ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।
এতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া বিদ্যালয়ের স্লিপ বিক্রির টাকা অফিসে জমা দিলেও তা শিক্ষার্থীদের কাজে ব্যয় না করে প্রধান শিক্ষক ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে আত্মসাৎ করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আরও জানা যায়, তিনি নিজের স্ত্রীকে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ দিয়েছেন এবং চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছেন। জমি সংক্রান্ত বিষয়েও গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
প্রধান শিক্ষক দাবি করেন বিদ্যালয়ের জমি তার মা দান করেছেন।
তবে প্রকৃত মালিক মোছাঃ ইছিতন নেছা অভিযোগ করেন, জমিটি জোরপূর্বক দখল করা হয়েছে। এসময় তাকে ভয়ভীতি ও হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়।
শিক্ষার্থীরা জানায়, পরীক্ষার সময় প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে ব্ল্যাকবোর্ডে উত্তর লিখে দেওয়া হয় যাতে সবাই বেশি নম্বর পায়। এছাড়া তিনি বিদ্যালয়ে উপস্থিত না থেকেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেছেন এবং সহকারী শিক্ষকের স্বাক্ষর নকল করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় অভিভাবকরা বলেন, আলতাব হোসেন একজন ভূমিদস্যু ও দুর্নীতিবাজ। তার অপকর্মের কারণে বিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট হচ্ছে এবং পড়াশোনার মান ক্রমেই নিম্নমুখী। স্কুলে যাতায়াতের রাস্তা পর্যন্ত মানুষের বাড়ির পাশ দিয়ে বাঁশঝাড় কেটে নিতে বাধ্য করা হয়েছে, যা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে একাধিকবার সংবাদ প্রচার হলেও এখনও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, তিনি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে রক্ষা পাচ্ছেন এবং আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে এলাকায় ফ্যাসিবাদী আচরণ করছেন।
এ পরিস্থিতিতে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী। তারা দ্রুত তদন্ত করে প্রধান শিক্ষক আলতাব হোসেনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন।
Sharing is caring!