
স্টাফ রিপোর্টার:
গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার তিলশুনিয়া গ্রামের সন্তান মোঃ ইমরান মোল্লা জীবনের কঠিন বাস্তবতার মধ্য দিয়ে উঠে এসে আজ মানবতার সেবায় কাজ করে যাচ্ছেন।
আলম মোল্লা ও সাবিনা ইয়াসমিন দম্পতির সন্তান ইমরান শৈশব-কৈশোর কাটিয়েছেন গ্রামেই। প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন ভাকোয়াদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এবং মাধ্যমিক পাস করেন ভাকোয়াদী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। মাধ্যমিক পরীক্ষার পর তার জীবনে নেমে আসে এক ভয়াবহ সংকট।
পরিবারের কর্ণধার পিতা প্রবাসে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়ে সর্বস্ব হারান। সেই সময়ে পরিবারের একমাত্র সন্তান হিসেবে দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে হয় ইমরানকে। পরিবার চালানোর পাশাপাশি শিক্ষাজীবন অব্যাহত রাখতে তিনি প্রাইভেট স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন। পাশাপাশি নানা ছোটখাটো কাজ করে উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি হন গাজীপুরের সুনামধন্য কাজী আজীমউদ্দিন কলেজে। শিক্ষাজীবনের নানা বাধা পেরিয়ে তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০২৪ সালে বিএ পাস করেন। ইমরান জানান, “শিক্ষকতা করার সময় থেকেই স্বপ্ন ছিল সমাজের অসহায়, অবহেলিত মানুষের জন্য কিছু করার।
” সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে তিনি ২০২৩ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ‘রাইটস ফর ডিসট্রেসড ফাউন্ডেশন (RDF)’, যা একটি অলাভজনক, স্বেচ্ছাসেবী মানবাধিকার সংস্থা। সংগঠনটি সকলের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং অদক্ষ জনশক্তিকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরের লক্ষ্যে সামাজিক উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ইমরান মনে করেন, “সহায়তা করতে বড় অঙ্কের অর্থের প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন আন্তরিক ইচ্ছা ও মানবিক মনোভাব।”
তিনি আহ্বান জানিয়েছেন, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমাজের প্রতিটি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মানবতার কল্যাণে কাজ করার।
তার ভাষায়, “এই পৃথিবীতে শূন্য হাতে এসেছি, শূন্য হাতেই চলে যেতে হবে। তবে কর্মের মাধ্যমে চিরস্থায়ী সম্মান অর্জন করা সম্ভব। আসুন, মাদক, গুম-খুন, সন্ত্রাসের মতো সামাজিক ব্যাধি থেকে নতুন প্রজন্মকে বাঁচাতে একসাথে কাজ করি। আমাদের ধন-সম্পদ, জ্ঞান ও মানসিক শক্তি যেটুকু আছে তাই দিয়েই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিই।” ইমরান মোল্লার এই উদ্যোগ এখন অনেকের মধ্যে অনুপ্রেরণা জাগাচ্ছে।
তিনি আশা করেন, সমাজের সর্বস্তরের মানুষ হাতে হাত মিলিয়ে একটি সুশৃঙ্খল ও সুন্দর সমাজ গঠনে এগিয়ে আসবে।
Sharing is caring!