
বিশেষ প্রতিনিধি।
অবশেষে নিখোঁজ সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকারের ভাসমান মরদেহ পাওয়া গেল মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ার মেঘনা নদীতে।
উল্লেখ্য, গতকাল সকাল ১০ টায় তাঁর সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে অফিসের উদ্দেশে বের হয়ে যাওয়ার পর আর তিনি বাসায় ফিরে আসেননি। এক নজরে ফিরে দেখা বিভুরঞ্জন সরকার একজন বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট, পত্রিকা সম্পাদক এবং লেখক। জন্ম ৬ জুন ১৯৫৪ সালে উত্তরের জনপদ পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায়। ষাটের দশকের শেষদিকে স্কুলছাত্র থাকতেই ‘দৈনিক আজাদ’ এর মফস্বল প্রতিনিধি হিসেবে সাংবাদিকতায় তাঁর হাতেখড়ি। তখন থেকেই তিনি ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের দিনাজপুর জেলা কমিটির সহসভাপতি এবং কেন্দ্রীয় সংসদের সহকারি সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। দিনাজপুর সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে তিনি ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থাতেই পেশা হিসেবে বেছে নেন সাংবাদিকতা। সাপ্তাহিক জয়ধ্বনি, একতা, যায়যায়দিন, দৈনিক সংবাদ, দৈনিক রূপালীতে কাজ করেছেন।
সম্পাদনা করেছেন সাপ্তাহিক চলতিপত্র, দৈনিক মাতৃভূমি এবং সাপ্তাহিক মৃদুভাষণ। তাঁর দৈনিক ‘মাতৃভূমি’তে নওগাঁর রানীনগর উপজেলা মফস্বল সংবাদদাতা হিসেবে কিছুদিন কাজ করার সুযোগ হয়েছিল আমার। আশির দশকের মধ্যভাগে সাপ্তাহিক ‘যায়যায়দিন’ প্রকাশিত হলে ‘তারিখ ইব্রাহিম’ ছদ্মনামে লেখা তাঁর রাজনৈতিক নিবন্ধগুলো বিপুল পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছিল। তিন দশকের বেশি সময় ধরে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বিশ্লেষণমূলক অসংখ্য কলাম লিখে চলেছেন তিনি বিভিন্ন দৈনিক, সাপ্তাহিক ও অনলাইনে।
মৃত্যুর আগ পর্যন্ত লিখেছেন দেশের প্রথম অনলাইন দৈনিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে এবং মুদ্রিত কাগজ দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন, দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক যুগান্তর, দৈনিক সংবাদ ও দৈনিক বর্তমানে। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা দশের অধিক।
তিনি পড়াশোনা করেছেন বোদা পাইলট হাই স্কুলে। পরবর্তীতে দিনাজপুর সরকারি কলেজে। সবশেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে তিনি সর্বোচ্চ ডিগ্রি লাভ করেন। ২০২৩ এর একুশে বইমেলায় আগামী প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর ‘বঙ্গবন্ধুঃ ইতিহাসের নির্মাতা’ ও ‘শেখ হাসিনাঃ স্বপ্ন পূরণের সফল কারিগর’ নামের মূল্যবান দুটি গ্রন্থ। অন্তিম শ্রদ্ধা।
Sharing is caring!