নিজস্ব প্রতিবেদক, (উখিয়া)
কৃষক বাঁচলে বাঁচবে দেশ, এটাই মোদের বাংলাদেশ। কৃষকের হাসিমুখ চেহারা মানেই বাংলাদেশ হাসে অবিচল। কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলায় চলতি মৌসুমে বোরো ধানের অসাধারন ফলন পরিলক্ষিত হচ্ছে। যেমন চাষ বেড়েছে তেমনি বেড়েছে ফলনও বেশি।
সরেজমিনে কৃষকের মাঠে গিয়ে দেখা যায় চোখ জুড়ানো সবুজের সমারোহ, যে দিকে তাকাই সে দিকে সবুজ আর সবুজ, মাঝখানে কিছু কিছু অংশে রংধনুর মত হলুদে বরে আসছে কৃষকের মাঠ! ধানের ভালো ফলন দেখে কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক।
উপজেলার রত্নাপালং ইউনিয়নের কৃষক মোঃ এনামুল হক বলেন বর্ষা মৌসুমে ধান চাষে সেচ কম লাগে তবে পোকামাকড়ের আক্রমণ বেশি কীটনাশক, সার খরচ এবার একটু বেশী টাকা খরচ হলেও ফলন বেশী হওয়ায় ধান চাষ করে লাভবান হওয়ার আশা করছি। তিনি খুব বেশি আশাবাদী যে, এবারের ফলন যথেষ্ট লাভবান হবেন।
উখিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকের ধান ক্ষেত পরিদর্শন করে দেখা গেছে যে, সোনালি ধানে দুলছে সবুজ ফসলের মাঠ। ইতোমধ্যে কিছু কিছু জমিতে ধান পাকা শুরু করেছে। জমির ধানের প্রতিটি গাছের থোকায় থোকায় ঝুলছে ধান। আশানুরূপ ফলন পাবে বলে জানিয়েছেন কয়েকজন কৃষক।
জালিয়া পালং ইউনিয়নের কৃষক মোঃ আবুল কালাম বলেন, আমি ব্রিধান-৭৫ জাতের ধান লাগিয়েছি, আশা করছি বিঘাপ্রতি ২০/২২ মন করে ধান পাবো।
ফালংখালী ইউনিয়নের কৃষক কায়সার আলী জানান, আমি এবার নতুন ব্রি ধান- ১০৩ নং ধানের চাষ করেছি। সব কিছু ঠিক থাকলে বিঘা প্রতি ২৮/৩২ মন হিসাবে ধান পাবো। তবে সারের দাম বেড়েছে। এমনকি ধান রোপণ থেকে কাটা পর্যন্ত শ্রমিকদের মজুরি বেশি। ধান কাটতে একজন শ্রমিককে ৭০০-৮০০ টাকা মজুরি দিতে হয় কিন্তু প্রচণ্ড গরমে বেশি টাকা দিয়েও মজুরি পাওয়া যাবে না।
হলদিয়া পালং ইউনিয়নের কৃষক কালু মিয়া বলেন, আমি এবার ব্রী-৪৯ জাতের ধান রুপন করেছি। ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছে। এ বছর ১ বিঘা জমিতে ২৮/৩০ মণ ধান উৎপাদন হবে বলে আশা করছি।
উখিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কামনাশিস সরকার বলেন, উখিয়া উপজেলায় প্রায় ৯ হাজার ৬ শত ৮৫ হেক্টর জমিতে ধানের চাষ করা হয়েছে। এরমধ্যে ব্রি - ৭৫, ৭৮, ৪৯, ৫১, ৫২ বিনা- ৭, ১৭, ২০, ২০ ও নতুন ব্রি-১০৩ সহ আরও অন্যান্য জাতের ধান আবাদ করে কৃষকরা আশানুরুপ ফলন পাবে বলে ধারনা করছেন। আমন ধান চাষাবাদে কৃষি অফিসের পক্ষ হতে কৃষকদের পাশে গিয়ে নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ বছর উখিয়ায় আশানুরুপ ধানের ফলন হয়েছে।
তিনি বলেন, এই মৌসুমে জলবায়ুর তেমন কোন সমস্যা না হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে চাষ ও বেড়েছে এবং ফলনও বেশি হয়েছে। বাম্পার ফলনে এখানকার কৃষক অনেক খুশি। আবহাওয়া ও বাজারদর অনুকূলে থাকলে কৃষকরা এবার প্রত্যাশা অনুযায়ী লাভবান হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।