আরিফ ইকবাল নেহালের নিয়ন্ত্রনে
গোয়াইনঘাটের সীমান্ত চোরাচালান
ভারতীয় পণ্য চেরচালানের ট্রানজিট পয়েন্ট সিলেটের সীমান্তিক উপজেলা গোয়াইনঘাট। উপজলার সীমান্তজুড়ে সকল বেআইনী বাণিজ্য, চাঁদাবাজিসহ সকল আকাম-কুকাম চালিয়ে আসছিল আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ। সাবেক সরকাদলের নেতা-খেতারাই নিয়ন্ত্রন করতো এসব অপকর্ম। বন্চিত ছিল মূদ্রার অপরপিট বিএনপির নেতাকর্মীরা।
কিন্তু গত ৫ আগস্ট ছাত্র-গণবিপ্লবে পতন ঘটে দীর্ঘ ১৬ বছর জাতির ঘাড় চেপে বসা স্বৈরাচারের। এ সময় পালিয়ে আত্মগোপনে চলে যান তৎকালীন সরকারদল আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা। সিলেটের গোয়াইনঘাটেও ঘটেনি এর ব্যতিক্রম।
সীমান্ত চোরাচালানের সাথে জড়িত সিলেটের গোয়াইনঘাট আওয়ামী নেতকর্মীরা গণপিটুনী ও গ্রেফতারের ভয়ে এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। তখন এ অপরাধীদের স্থলাভিষিক্ত হয়ে যায় বিএনপি-যুবদল।
তারা হাতিয়ে নেয় চোরাচালান, পুলিশ-বিজিবি লাইনম্যানদের চাঁদাবাজিসহ সকল অপকর্ম। আওয়ামী লীগের বদলে পূরো গোয়াইনঘাটের নিয়ন্ত্রন নিয়ে নেয় বিএনপি-যুবদলের নেতা-হোতারা। আর এ সব চোরাচালানী ও লাইনম্যানদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপজেলার বরখাস্ত হওয়া ইউপি চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আরিফ ইকবাল ওরফে নেহাল।
নেহালের নেতৃত্বে সীমান্ত জুড়ে চলছে রমরমা চোরাচালান ও জমজমাট চাঁদাবাজি। তবে চোরাকারবারীর চেয়ে চাঁদাবাজদের সংখ্যাই বেশি। নেহালের নেতৃ্ত্বে আওয়ীমী আমলের চেয়ে আরো ভয়ংকর হয়ে ওঠেছে বিএনপি যুবদল নামধারী চাঁদাবাজরা । সীমান্ত জূড়ে চোরাচালান ও চাঁদাবাজি চলছে তারই (নেহালেরই) ইশারাতে।
সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক নেতা ও বর্তমান গোয়াইনঘাট উপজেলা বিএনপির সদস্য বরখাস্তকৃত ইউপি চেয়ারম্যান আরিফ ইকবাল নেহাল এর নিয়ন্ত্রণে গোয়াইনঘাট সীমান্তে গড়ে ওঠেছে নতুন করে চাঁদাবাজ চক্র। নেহাল চক্রের ৫০ জন লাইনম্যান পুরো উপজেলা জুড়ে চালাচ্ছে চাঁদবাজির মহোৎসব।
বিএনপি নেতা আরিফ ইকবাল নেহাল ছিলেন গোয়াইনঘাট উপজেলার ৯নং ডৌবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান। এ সময় ২০১৯ সালে এলজিএসপির-৩ স্কীমের ১২ লক্ষ ৩ হাজার টাকা আত্মসাতের দায়ে তাকে বরখাস্ত করা হয়।
এলাকা জড়ে তিনি লুটেরা দুর্নীতিবাজ বলে চিহ্নিত হলেও দল থেকে তাকে বহিস্কার করেনি বিএনপি। বর্তমানে নেহাল নিজেকে বিএনপির ক্ষমতাধর সিনিয়র নেতা পরিচয়ে দাপটের সাথে উপজেলা জুড়ে চাঁদাবাজি ও চোরাচালান বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন।
স্থানীয় সূত্র,জানায়, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পরই নেহাল সিলেট নগরীর আম্বরখানাস্থ একটি আবাসিক হোটেলে চোরাকারবারীদের সাথে গোপন বৈঠক করেছিলেন। এরপর থেকে শুরু হয় বুঙ্গার (চোরাচালানের) লাইন দখল ও,চাঁদাবাজি। প্রথমেই তিনি উপজেলার শীর্ষ লাইনম্যান সামসুদ্দিন উরপে শ্যামকালা ও তার সহযোগী আল-আমিনকে কৌশলে হাত করে নেন। এর পর থেকে নগরীর বারুতখানাস্থ একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করে সেখান থেকে নিয়ন্ত্রণ করছেন চোরাচালানের মিশন।
এই মিশনে তার সাথে আরো অংশ নেন সিলেট জেলা যুবদলের আবুল কাশেম, আজির উদ্দিন,জয়দুল হোসেন ও স্থানীয় কতিপয় নামধারী সাংবাদিক।
নেহাল চক্রের চাঁদাবাজি ও রাহাজানীর প্রতিবাদে
বুধবার (১৩ নভেম্বর) উপজেলার ফতেহপুর বাজারে এক সভা হয়। সেখানে বক্তারা আরিফ ইকবাল নেহালকে কঠোর হুশিয়ারী প্রদান করে বলেন- গোয়াইনঘাট থানা পুলিশের প্রতিটি ভিট অফিসারদের সাথে নেহালের রয়েছে গভীর সম্পর্ক। যার ফলে তিনি উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে তাহার নিজস্ব মানুষ সেট করে রেখেছন। উপজেলাবাসীর কাছে এরা লাইনম্যান হিসাবে চিহ্নিত এবং পুলিশের অবৈধ আয়ের হাতিয়ার।
বক্তারা আরো বলেন-আরিফ ইকবাল নেহাল আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অবৈধ সুবিধা নেওয়ার জন্য গোয়াইনঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ইব্রাহিম আলীর মাধ্যমে আওয়ামী লীগে যোগদানের চেষ্টাও করেন।তখন আওয়ামী লীগে যোগদানের প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় তিনি যোগ দিতে পারেননি। তবে এর আগেও আওয়ামী লাইনম্যানদের সাথে তার গভীর সখ্যতা ছিল বলে বক্তারা অভিযোগে করেন।