স্বপ্না শিমু স্টাফ রিপোর্টার
ভেনেজুয়েলার উপকূল থেকে আরও এক তেল ট্যাংকার আটক করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলাগামী তেল ট্যাংকার অবরোধের নির্দেশ দেয়ার পাঁচদিনের মাথায় এই তেল ট্যাংকার আটক করা হলো। ভেনেজুয়েলার উপকূলে আরও এক তেল ট্যাংকার আটক করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টি নোয়েম শনিবার (২০ ডিসেম্বর) তেল ট্যাংকার আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এক এক্স পোস্টে তিনি জানান, শনিবার ভোরে মার্কিন কোস্টগার্ড পেন্টাগনের নির্দেশনায় জাহাজটি আটক করেছে।
তিনি লেখেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলে মাদক সন্ত্রাসবাদের অর্থায়নে ব্যবহৃত নিষিদ্ধ তেলের অবৈধ চলাচল অব্যাহত রাখবে।’ পোস্টটির সাথে প্রায় আট মিনিটের একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন নোয়েম, যেখানে সেঞ্চুরিজ নাম লেখা একটি জাহাজের ডেকে অবতরণ করতে দেখা যাচ্ছে। এর মাধ্যমে চলতি মাসে দ্বিতীয়বারের মতো ভেনেজুয়েলা উপকূল থেকে তেলবাহী জাহাজ আটক করলো যুক্তরাষ্ট্র।
সেঞ্চুরিজ একটি পানামা-পতাকাযুক্ত জাহাজ। তবে গত পাঁচ বছরে এটি গ্রিস এবং লাইবেরিয়ার পতাকার নিচেও চলাচল করেছে। এটি মার্কিন ট্রেজারির অনুমোদিত জাহাজের তালিকায় নেই।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় সাগরে সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধি করেছে। ভেনেজুয়েলার আশপাশের অঞ্চলে কয়েক হাজার সেনা এবং ডজনখানেক যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে। এর মধ্যে একটি বিমানবাহী রণতরীও রয়েছে। সেই সঙ্গে গত সেপ্টেম্বর থেকে মাদক চোরাচালানের অভিযোগে ক্যারিবীয় ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে নৌকায় একের পর এক হামলা চালাচ্ছে। এতে এখন পর্যন্ত প্রায় ১০০ জন মানুষ নিহত হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন তাদের ‘মাদক সন্ত্রাসী’ বলে দাবি করে বলছে, নৌকাগুলোতে মাদক বহন করা হচ্ছিল। যদিও নিজেদের এই দাবির পক্ষে কোনো প্রকাশ্য দেয়নি বা দিতে পারেনি। এসব হামলার জন্য মার্কিন সামরিক বাহিনী কংগ্রেসের তদন্তের মুখে রয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর উৎখাতে সর্বোচ্চ চাপ বৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছে। এরই অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) ভেনেজুয়েলায় আসা–যাওয়া করা সব তেল ট্যাংকার অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দেন ট্রাম্প। মূলত ওয়াশিংটন ভেনেজুয়েলার প্রধান আয়ের উৎসকে নিশানা করে চাপ বৃদ্ধি করতে যে চেষ্টা চালাচ্ছে, তারই সর্বশেষ সংযোজন এটি।
একই সঙ্গে ট্রাম্প মাদুরো সরকারকে ‘বিদেশি সন্ত্রাসী’ সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেন। ভেনেজুয়েলা সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলোকে ‘আন্তর্জাতিক জলদস্যুতা’ বলে অভিহিত করেছে। দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেলসি রদ্রিগেজ এক বিবৃতিতে বলেন, ভেনেজুয়েলা ‘আন্তর্জাতিক জলসীমায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কর্মীদের দ্বারা সংঘটিত একটি নতুন বেসরকারি তেল পরিবহনকারী জাহাজ চুরি ও ছিনতাইয়ের পাশাপাশি এর ক্রুদের জোরপূর্বক অন্তর্ধানের নিন্দা ও প্রত্যাখ্যান করছে’। ২০১৯ সালে ভেনেজুয়েলার জ্বালানি খাতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর থেকে দেশটির তেলের ক্রেতা ও শোধনাগারগুলো তথাকথিত ‘শ্যাডো ফ্লিট’ ব্যবহার করছে।
এসব ট্যাংকার নিজেদের অবস্থান গোপন রাখে। অনেক ক্ষেত্রে ইরান বা রাশিয়ার তেল পরিবহনের কারণে আগে থেকেই মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা জাহাজগুলো ব্যবহার করা হয়। ট্যাংকার ট্র্যাকার্স ডটকমের তথ্য অনুযায়ী, ভেনেজুয়েলার জলসীমায় থাকা বা দেশটির দিকে আসা ৮০টি জাহাজের মধ্যে ৩০টির বেশি জাহাজের ওপরই যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আছে।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক -শেখ তিতুমীর আকাশ।
বার্তা প্রধান : মোঃ সেলিম উদ্দিন
ইমেইল: dailyswadhinbhasha@gmail.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি। সকল স্বত্ব www.swadhinbhasha.com কর্তৃক সংরক্ষিত।